ধীমান রায়, কাটোয়া: দু’মাস হল শারদোৎসব পেরিয়ে গিয়েছে। দু’মাসের মাথায় ফের দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতল পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের চাকুলিয়া গ্রাম। নতুন করে মুর্তি তৈরি হয়েছে। গ্রামের বারোয়ারিতলায় বাঁধা হয়েছে মণ্ডপ। প্রথা মেনে পুজোর সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে আবার চাকুলিয়া গ্রামে শুরু হল চারদিনের দুর্গাপুজো। তবে বিশেষ কারণেই এবছর দুবার পুজো করতে বাধ্য হয়েছেন চাকুলিয়া গ্রামের ঘোষপাড়ার বাসিন্দারা। পুজোর জন্য রীতিমতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদাও তুলতে হয়েছে। হোক না অতিরিক্ত খরচ। নবান্ন উৎসব শেষে অকাল শারদোৎসবে মাতোয়ারা গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা।
কিন্তু কেন এই ডিসেম্বর মাসে দুর্গাপুজো মঙ্গলকোটের এই অখ্যাত গ্রামে? চাকুলিয়া ঘোষপাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন তাদের বারোয়ারি পুজো প্রায় দুশো বছরের প্রাচীন। এবছরেও দুর্গাপুজো হয়েছিল শরৎকালে। তবে বিপত্তি ঘটে গত ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন। প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা চলাকালীন হঠাৎ কোনওভাবে দেবীর কাপড়ে আগুন ধরে যায়। পুড়ে যায় দেবীর অঙ্গাভরণ। তানিয়ে গ্রামবাসীদের চিন্তার অন্ত ছিল না। শেষে পণ্ডিতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকুলিয়াবাসী। পণ্ডিতই নির্দেশ দিয়েছিলেন ফের নতুন করে পুজো করতে হবে। না হলে গ্রামের অমঙ্গল হতে পারে। পুজো কমিটির কর্মকর্তা বিপদভঞ্জন ঘোষের কথায়, ”দেবী যাতে রুষ্ট না হন সেই কারণেই পণ্ডিতের নির্দেশ মেনে পুজো করছি। পুজোর আয়োজনেও কোনও খামতি রাখিনি।”
ঘোষপাড়ার প্রায় ৩০টি পরিবার চাঁদা তুলে চাকুলিয়া ঘোষপাড়া বারোয়ারি দুর্গামন্দিরে পুজো শুরু করেছেন। শুক্রবার সপ্তমী। চারদিনের পুজো। পুরনো একচালার কাঠামোয় দেবীর মুর্তি তৈরি করা হয়েছে। সোমবার বিজয়া দশমী। পুজো কমিটির সদস্য প্রকাশ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ হাজার টাকা পুজোর বাজেট। সবটাই বাড়ি বাড়ি চাঁদা তুলে সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘোষপাড়ার গৃহবধূ, মুনমুন ঘোষ, রেণুকা ঘোষরা বলেন, ”ফের একবার দুর্গাপুজোর আনন্দে সামিল হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আমাদের বাড়িতে অনেক কুটুমও এসেছেন পুজো দেখতে।” দশমীর দিন মোচ্ছবের আয়োজন রেখেছেন পুজোকমিটির সদস্যরা। তবে সকলেই দেবীর কাছে একটাই প্রার্থনা করছেন যাতে ভালয় ভালয় নিখুঁতভাবে পুজোটা কাটে।”
The post অগ্রহায়ণ শেষে দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতল মঙ্গলকোটের গ্রাম, কেন জানেন? appeared first on Sangbad Pratidin.
