সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: হাতির হামলার ঘটনার পর বিট অফিসার-সহ মোট পাঁচ বনকর্মীকে গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে ‘শাস্তি’র ঘটনায় এফআইআর করল বনদপ্তর। পুরুলিয়া বন বিভাগের আড়শা বনাঞ্চলের ওই বিটের আধিকারিক রঞ্জিত সিং সর্দার চারজনের নামে আড়শা থানায় অভিযোগ করেছেন। অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধেও অভিযোগ হয়েছে। আড়শা থানার পুলিশ জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত চলছে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চারজনের নাম জগজীবন সিং মুড়া, হরিরাম সিং মুড়া, ধীরাজ সিং মুড়া ও মদন সিং মুড়া। তাদের বাড়ি আড়শা থানার ঘাটিয়ালি গ্রামে। রবিবার সকালে এই ঘাটিয়ালি গ্রামে হাতির হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পর ফর্ম নিয়ে সমীক্ষা করতে যান বিট অফিসার-সহ বন কর্মীরা। এরপরই এলাকার মানুষজন তাদেরকে ঘিরে ধরে গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শনিবার মধ্যরাতে দলছুট একটি দাঁতাল গ্রামে এসে একটি কাঁচা বাড়ি ভেঙে দেয়। তারপর আড়শা বনাঞ্চল-সহ বিট অফিসার এমনকী হুলা পার্টিকে জানানো হলেও তারা কোনও হেলদোল দেখাননি। সেই কারণেই পরের দিন সকালে এলে তাদেরকে বেঁধে রেখে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: প্রথম দেখাতেই প্রেম! কাশ্মীরে বিয়ে সারলেন সরফরাজ, শুভেচ্ছা সূর্যকুমার-অক্ষরের, পাত্রী কে?]
এই ঘটনায় রীতিমতো হৈ চৈ বেঁধে গিয়েছে পুরুলিয়া বনবিভাগে। ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষার মতো সরকারি কাজ করতে গিয়ে এভাবে শারীরিক নিগ্রহের বিষয়টিকে একেবারেই ভাল ভাবে দেখছে না পুরুলিয়া বনবিভাগ। এই ঘটনায় যাতে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে সেই বিষয়টিও পুরুলিয়া বনবিভাগের তরফে পুলিশের কাছে জানানো হয়েছে। না হলে এই ঘটনা আরও ঘটে যেতে পারে। ফলে জঙ্গলমহলের এই জেলায় প্রত্যন্ত গ্রামে কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হবে বনকর্মীদের।
এমনিতেই রবিবারের ওই ঘটনার পর খানিকটা ভীত সন্ত্রস্ত জেলার বনকর্মীরা। যে সকল বনকর্মী জঙ্গলের ভিতরে টহল বা সামাজিক বনসৃজনের কাজ করেন। কিংবা দপ্তরের বহু দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারের অভিযানে শামিল হন, সেই সব কাজ এখন বন কর্মীদের কাছে ভীষণই কঠিন মনে হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে পুরুলিয়া বনবিভাগ কর্মীদেরকে অভয় দিয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুরুলিয়া বন বিভাগের এই আড়শা বনাঞ্চলে একেবারেই ভালভাবে কাজ হচ্ছে না। সেই কারণেই বন কর্মীদের উপর ক্ষোভ আছড়ে পড়ে অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জের ওই ঘাটিয়ালি গ্রামের।
