shono
Advertisement
Royal Bengal Tiger

বাড়ির উঠোনে বাঘ-দর্শন! তবু চুরির আশঙ্কায় ট্র্যাপ ক্যামেরা খুলে নিল পুরুলিয়ার বনদপ্তর

চাণ্ডিল থেকে দলমা, এতটুকুও কমেনি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আতঙ্ক।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 10:59 PM Jan 10, 2025Updated: 11:19 PM Jan 10, 2025

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আবার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দর্শন পুরুলিয়ার সীমানায় ঝাড়খণ্ডের চান্ডিলের গ্রামে! বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া জেলার চাণ্ডিলের চয়নপুর গ্রামে ওই ব্যাঘ্র দর্শন করেছেন বলে দাবি মালতী মাহাতো নামে এক মহিলার। তিনি ওই দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির উঠোনে কাঠের আগুন জ্বালিয়ে ধান সেদ্ধ করছিলেন। সেই সময়ই ওই মহিলার চোখে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার! ঝাড়খণ্ড বন বিভাগের চাণ্ডিল বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষ এই খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যায়। ওই মহিলার বয়ান তালিকাভুক্ত করে। এ বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

Advertisement

তবে বাঘ তত্ত্বে এখনও সিলমোহর দেয়নি চাণ্ডিল রেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। চাণ্ডিল বনাঞ্চলের আধিকারিক শশীরঞ্জন প্রকাশ বলেন, "আমরা ওই খবর পাওয়া মাত্রই চয়নপুর গ্রামে গিয়েছিলাম। গ্রামের মানুষজন যাকে বাঘের পায়ের ছাপ বলছে তা নয়। সমস্ত কিছু আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে ট্র্যাপ ক্যামেরা আমরা খুলে দিয়েছি।" এদিকে ওই দিনই দলমা পাহাড় রেঞ্জের পড়ডি গ্রামের পাশে তিসরি জঙ্গলেও নাকি বিকালের দিকে বাঘ দেখতে পান ২-৩ জন বাসিন্দা। সেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা নেই বলে জানিয়েছে ঝাড়খণ্ড বন বিভাগ।

গত মঙ্গলবার থেকে চাণ্ডিল বনাঞ্চলের একাধিক জায়গায় এভাবে বাঘের দেখা মিলছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনাগুলোর একটিকেও বাঘের পদচারণা হিসেবে আমল দিতে নারাজ বনদপ্তর। চাণ্ডিল এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে বাগে আনতে রীতিমতো হাল ছেড়ে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড বনবিভাগ। অথচ সরাইকেলা-খরসোওয়া ও দলমা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য এলাকায় ডিএফও পদমর্যাদার প্রায় সাত থেকে আট জন আধিকারিক, পালামৌ টাইগার রিজার্ভের বিশেষজ্ঞরা তদারকি করলেও রেডিও কলারহীন বাঘের সঠিক অবস্থান বুঝতে পারছেন না তারা।

এই কারণেই গত মঙ্গলবার থেকে পরপর তিনদিন সন্ধ্যা নামলেই চাণ্ডিলের বিভিন্ন গ্রামে বাঘ ভীতি সামনে আসছে। চয়নপুর গ্রামের ওই মহিলা মালতী মাহাতো বলেন, "ওই দিন সন্ধ্যার পর আমি বাড়ির উঠোনে কাঠের উনুন জ্বালিয়ে ধান সিদ্ধ করছিলাম। কিছুটা দূরে চোখ পড়তে দেখি বাঘ। সঙ্গে সঙ্গে ওখান থেকে সরে যাই। আমার স্বামীকে ডাকতে থাকি। আমার ওই রকম আচরণ দেখে আমার স্বামী আমাকে ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর ফোনে ফোনে গ্রামের মানুষজনকে খবর দিলে কিছুক্ষণ পর সবাই আমাদের বাড়ির উঠোনে জড়ো হন। বনদপ্তরে খবর দেওয়া হলে আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের পায়ের ছাপ দেখানো হয়। সমস্ত বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু তারা বাঘের ব্যাপারটা মানতে নারাজ।"

ঝাড়খণ্ড বনবিভাগ কয়েকদিন ধরে এই বিষয়টিকে একেবারে হালকাভাবে দেখছে বলে অভিযোগ। ওই মহিলার কথায়, "এরপর যদি কোনও ঘটনা ঘটে যায় তাহলে কিন্তু বনদপ্তর দায়ী থাকবে।" এদিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের রোমাঞ্চ নিতে চাণ্ডিলে দিনের বেলায় বহু মানুষজন গাড়ি নিয়ে ঢুকছেন। সন্ধ্যা নামার আগেই সেই সব গাড়ির আর দেখা মিলছে না। শুনশান হয়ে যাচ্ছে চাণ্ডিল-সহ আশপাশের গ্রামগুলি। দলমা রেঞ্জ লাগোয়া পড়ডি গ্রামের বাসিন্দা পশুপতি মাহাতো বলেন, "তিসরি জঙ্গল থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ফেরার সময় নিজের চোখে আমরা বাঘ দেখেছি। বনদপ্তরকে জানিয়েছি। কিন্তু বনদপ্তর বিশ্বাস করতে চায়নি। কিছুদিন ধরেই বনদপ্তরের ভূমিকা আমাদের একেবারেই ঠিক লাগছে না। চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সমস্ত ট্র্যাপ ক্যামেরা খুলে দিয়েছে বনদপ্তর। লোকালয়ে বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ বনদপ্তর সম্পূর্ণ উদাসীন।বনদপ্তর চাইলে বাঘটির কোন ব্যবস্থা করতে পারত।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • চাণ্ডিলের চয়নপুর গ্রামে ভর সন্ধ্য়ায় উঠোনে বাঘ-দর্শন গৃহবধূর!
  • তবে বনদপ্তর বাঘের অস্তিত্ব মানতে নারাজ, চুরির আশঙ্কায় ট্র্যাপ ক্যামেরা খুলে নেওয়া হল।
Advertisement