বাবুল হক, মালদহ: ডিজে বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে অভ্যস্ত সকলেই। কিন্তু শ্মশানযাত্রায় ডিজে বাজতে দেখেছেন কখনও? ভাবছেন তো এ আবার কেমন প্রশ্ন? পরিজনের শেষযাত্রার মতো যন্ত্রণাদায়ক কোনও কিছুর সঙ্গে ডিজে কি বাজতে পারে, এই প্রশ্নও নিশ্চয়ই আপনার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে আপনি যাই ভাবুন না কেন, এমন কাজই করে দেখিয়েছেন মালদহের মানিকচক থানার মথুরাপুরের ধনরাজটোলা গ্রামের বাসিন্দা রফি মহলদারের পরিজনেরা। রীতিমতো ডিজে বাজিয়ে ওই ব্যক্তিকে শ্মশানে নিয়ে যান তাঁর নাতি।
১০৫টি বসন্ত কাটিয়েছেন রফি মহলদার। দিন যত যাচ্ছিল ততই যেন বার্ধক্যজনিত রোগ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরছিল তাঁকে। তাই বাড়িতে চিকিৎসকের আনাগোনা প্রায় লেগেই থাকত। নতুন বছরের শুরুতেই ঘটল ছন্দপতন। বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যু হয় রফি মহলদারের। কান্নাকাটিতে ভারী হয়ে যাওয়ার কথা ছিল গোটা বাড়ি। কিন্তু বৃদ্ধের মৃত্যুর পর মহলদার পরিবারের ছবি একেবারেই অন্যরকম। শতবর্ষ পেরনো দাদুর মৃত্যুতে কান্নাকাটি তো দূর পরিবর্তে যেন গোটা বাড়িজুড়ে উৎসবের আবহ। ফুল হাতে নিয়ে সকলেই তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা জানান। এরপর শেষকৃত্যের জন্য বাড়ি থেকে বেরোন তাঁর নাতিরা। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় বাজতে থাকে ডিজে। খইয়ের পাশাপাশি গোটা রাস্তা জুড়ে ছড়ানো হল আবির। ওই আবির একে অপরের গায়ে মাখিয়ে দিতেও ভুললেন না কেউ। ফাটানো হল আতশবাজিও। মৃতের নাতি সুকুমার মহালদার বলেন, “একশো বছর পার করে দাদু মারা গিয়েছেন। তাতেই গোটা গ্রামের মানুষ খুশি। তাই আনন্দ করতে করতেই দাদুকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।” এদিকে, শব্দবাজি ফাটিয়ে ডিজে বাজিয়ে মৃতদেহ সৎকারে নিয়ে যাওয়া সচরাচর দেখেননি কেউই। তাই রাস্তা দিয়ে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। তাই শ্মশানযাত্রীদের দেখতে রাস্তার আশেপাশে ভিড় জমে যায়।
[আরও পড়ুন: মহিলাকে কটূক্তির জের, দত্তপুকুরে পিটিয়ে খুন যুবককে]
কয়েকমাস আগে বীরভূমের সিউড়ির আনন্দপুর ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা শংকরচরণ মাল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বেশ কয়েকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে মারা যান তিনি। সেক্ষেত্রেও ওই ব্যক্তিকে ডিজে বাজিয়ে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে হইচই ফেলে দেন নিহতের নাতি-নাতনিরা। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল মালদহের মানিকচক থানার মথুরাপুরের ধনরাজটোলা গ্রামে।
দেখুন ভিডিও:
The post শতায়ু দাদুর শ্মশানযাত্রায় বাজল ডিজে, ব্যতিক্রমী কীর্তি নাতির appeared first on Sangbad Pratidin.
