গোবিন্দ রায়: চার বছর আগে তীর্থে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন সুনীতা গওর। চার বছর পর নিখোঁজ সুনীতাকে ঘরে ফিরিয়ে দিল হ্যাম রেডিও (Ham Radio)। খুশির হাওয়া গ্রামে। চার বছর বাদে মাকে খুঁজে পেয়ে খুশি তাঁর ছেলে-মেয়েরাও। পরিবার-পরিজনদের ফিরে পেয়ে খুশি মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাও।
সুনীতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, “গত সাত বছর আগে দুর্ঘটনায় স্বামী মারা যাওয়ার পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন উত্তর প্রদেশের আজমগর জেলার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব সুনিতা গওর। সেই থেকেই সবাইকে তিনি বলতেন, “তীর্থে যাব, তীর্থে যাব।” এরপর হঠাৎ একদিন বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। গত চার বছর ধরে খোঁজ করেও কোথাও পাওয়া যায়নি তাঁকে। পুলিশও তাঁর কোনও খোঁজ দিতে পারেনি। তবে অবশেষে তাঁর খোঁজ মিলল সীমান্তবর্তী সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জে। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলার সেবা-শুশ্রুষা করে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দারা। সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন স্থানীয় প্রশাসন ও বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বাজার কমিটির সম্পাদক এবং ওষুধ ব্যবসায়ী সুশান্ত ঘোষ। পরবর্তীতে এই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার কথা তিনি জানান রাজ্য হ্যাম রেডিও ক্লাবের কাছে।
[আরও পড়ুন: রূপনারায়ণ-দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত খানাকূল, দুর্গতদের উদ্ধারে নামল বায়ুসেনা]
রবিবার হ্যাম রেডিওর সহযোগিতায় উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সহযোগিতায় মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলার পরিবারের খোঁজ মেলে। এরপর তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁকে চিনতে পারেন তাঁর ছেলে-মেয়ে ও ভাই-বোন। সামনে আসে তাঁর হারিয়ে যাওয়ার কাহিনি। সোমবার সেই মহিলাকে উত্তরপ্রদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সন্তানের কাছে মাকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি পশ্চিমবঙ্গ হ্যাম রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ। তিনি বলেন, তীর্থে গিয়ে সন্তানদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন এক মহিলা, তাঁকে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা খুশি। অন্যদিকে, মনের তৃপ্তি, শান্তি, মানবিকতার জন্য গত ১৫ বছরে প্রায় ৬০ জন মানসিক ভারসাম্যহীনকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ফিরিয়ে দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিলেন হিঙ্গলগঞ্জের সুশান্ত ঘোষ।