দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)বহু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। স্বামীর সন্দেহ, অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন, চ্যাট করেন। স্রেফ এই সন্দেহের জেরে কোন্নগরে (Konnagar) এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল। রবিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই গৃহবধূর মৃতদেহ ঘরের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় কোন্নগর ফাঁড়িতে। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। খুনের পর পলাতক স্বামী। তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার আত্মীয়রা।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই গৃহবধূর নাম পল্লবী দাস। বয়স মাত্র ২৪ বছর। অভিযোগ, স্বামী রিন্টু দাস রবিবার ভোররাতে স্ত্রীকে খুন করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় গৃহবধূর এক আত্মীয় উত্তরপাড়া (Uttarpara) থানায় রিন্টু দাসের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। মৃত গৃহবধূ পল্লবী কোন্নগর সূর্য সেন স্ট্রিটের বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। গৃহবধূ বাড়ির কাছেই একটি শাড়ির দোকানে কাজ করতেন। স্বামী রিন্টু পেশায় রং মিস্ত্রি। গৃহবধূর দেওর, শাশুড়ি-সহ স্থানীয়দের অভিযোগ, স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও সঙ্গে কথা বললে বা চ্যাট (Chat) করলে স্বামী সন্দেহ করত।
[আরও পডুন: শিবমন্দিরের পিছন থেকে উদ্ধার মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ, চাঞ্চল্য জামালপুরে]
রিন্টু দাসের সন্দেহ ছিল, স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কোনও পুরুষের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর প্রায়শই অশান্তি হত। অভিযোগ, স্ত্রী পল্লবীকে মারধরও করত স্বামী। রবিবার সকালে ঘরের দরজা খোলা থাকলেও এলাকার মানুষ পল্লবীকে বাইরে বেরতে না দেখে সন্দেহ হয়। এরপরই তারা ঘরে ঢুকে দেখেন, মেঝেতে পড়ে রয়েছেন গৃহবধূ। শরীর ঢাকা দেওয়া চাদরে।
[আরও পডুন: ‘খালি কলেজটা খুলতে দাও…’, ফের বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে হুঁশিয়ারি অনুব্রতর]
এরপর তাঁরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। গৃহবধূর শাশুড়ি মনা দাস ও দেওরের বক্তব্য, পল্লবী ভাল মেয়ে। তাঁরাই অভিযোগ জানাচ্ছেন, রিন্টু সোশ্যাল মিডিয়ায় বউমাকে কারও সঙ্গে কথা বললে সন্দেহ করত। মারধর পর্যন্ত করত বলে তাঁরা স্বীকার করে নেন। আগে তাঁরা রিন্টুর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন। বছর ছয়েক আগে রিন্টুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁরা ছেলে-বউকে ছেড়ে অন্যত্র বাড়ি ভাড়া করে উঠে যান। তাঁরা জানান, রিন্টু যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তাঁরা কখনওই ছেলেকে সমর্থন করবেন না। বাড়ির মেয়েকে খুনের অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।