শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ওষুধের দোকানের আড়ালে চিকিৎসার নামে ভুয়ো কর্মকাণ্ড। পাঁচতলা বাড়িতে নার্সিংহোম বানিয়ে রোগী রেখে চলছিল চিকিৎসা। কিন্তু রোগী মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই কীর্তি ফাঁস ভুয়ো চিকিৎসকের। চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগে ভুয়ো চিকিৎসক নন্দগোপাল রায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডুয়ার্সের বানারহাটের শালবাড়ি এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা এই ভুয়ো চিকিৎসক। তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই কোনও রকম ডিগ্রি ছাড়াই রোগী রেখে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠছে। তাঁর চিকিৎসায় দুমাসু রায় (৫৯) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা সামনে আসতেই অভিযুক্তর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, এই পাঁচতলা বাড়ির নিচে রয়েছে ওষুধের দোকান। তার উপরে রয়েছে হাতুড়ে ডাক্তারের অলিখিত নার্সিংহোম। যেখানে রোগী রেখে চিকিৎসা, অস্ত্রোপচার করার মতো সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে ভিতরে। অভিযোগ, নতুন গঠিত বানারহাট ব্লকে সেই অর্থে ভাল চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতেন এই ভুয়ো হাতুড়ে চিকিৎসক। কোনও রকম ডিগ্রি ছাড়াই নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাধারণ চিকিৎসা থেকে অস্ত্রোপচার সবটাই নিজে করতেন। রোগী ধরতে গ্রামেগঞ্জে ভুয়ো চিকিৎসকের একাধিক এজেন্টও ছড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। এতদিন পার পেয়ে গেলেও রোগী মৃত্যুর ঘটনার পরেই কীর্তি ফাঁস হয়ে যায় চিকিৎসকের।
[আরও পড়ুন: বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে যাদবপুর কাণ্ডে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার সপ্তক, হতভম্ব এগরার বাসিন্দারা]
মৃতের আত্মীয় রাজকুমার রায় জানান, “সোমবার শ্বশুরমশাই অসুস্থ হয়ে পড়লে নন্দগোপালের কাছে নিয়ে আসেন। স্যালাইন দিয়ে ভর্তি রেখে দেওয়া হয় তাঁকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানায় রোগীর অবস্থা খারাপ। অন্য কোথাও নিয়ে যাও। বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।” এরপর ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
এই ঘটনার পর বানারহাট থানার আইসি শান্তনু সরকার জানান, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তার কাছে কোনও ডিগ্রি নেই। চিকিৎসার নামে অবৈধ কারবার চালাচ্ছিল। প্রতারণা করছিল, সেই অভিযোগে নন্দগোপাল রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
