সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এস সোমনাথ অতীত, ইসরোর শীর্ষে খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তনী ভি নারায়ণন। তিনি একইসঙ্গে মহাকাশ দপ্তরের সচিবেরও দায়িত্ব পালন করবেন। ছয় বছর পর সন্তোষ ট্রফি জয়ের মতো কাণ্ড না হলেও, এও একপ্রকার বাংলার জয়। ভরা শীতকালে বঙ্গের মেধাচর্চার জয়ে সবচেয়ে বড় ক্যাম্পাসে বইছে আত্মশ্লাঘার উষ্ণ হাওয়া!
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসরোর নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তখনই জানানো হয়েছিল, ১৪ জানুয়ারি ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যান এস সোমনাথের কার্যকাল শেষ হচ্ছে। সেই দিনই ইসরোর চেয়ারম্যান এবং মহাকাশ দপ্তরের সচিব হিসাবে দায়িত্ব নেবেন ভি নারায়ণন। আগামী দুবছরের জন্য ইসরো প্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। বলা বাহুল্য, ভূঁইফোড়কে ইসরো প্রধানের কুর্সিতে বসানো হচ্ছে না। এর আগেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন নারায়ণন।
যেমন, লিকুইড প্রপালশন সিস্টেম সেন্টারের (এলপিএসসি) প্রধান ছিলেন তিনি। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন নারায়ণন। উল্লেখ্য, ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন প্রযুক্তি মহাকাশযান উৎক্ষেপণের জন্য জরুরি। বলে রাখা ভালো, আগে থেকেই ইসরোর একাধিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এই ভারতীয় বিজ্ঞানী। যার একটি হল গগনযান প্রজেক্ট। এছাড়াও উৎক্ষেপণ যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন তিনি। মেধার এই উৎকর্ষের নেপথ্যে তামিলনাড়ুর স্কুল থেকে আইআইটি খড়গপুর।
তামিলনাড়ুতেই কৃষক পরিবারে জন্ম নারায়ণনের। তামিল মাধ্যমের স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। ১৯৮৪ সালে কর্মজীবনের শুরু থেকে ইসরোর সঙ্গে সংযোগ। ১৯৮৯ সালে যান কেরলের 'ভালিয়ামালায় লিকুইড প্রপালশন সিস্টেমস সেন্টারে'। বর্তমানে সেই সেন্টারেরই প্রধান তিনি। ইসরোর বিজ্ঞানী হিসাবেই দেশের দক্ষিণপ্রান্ত থেকে এক্কেবারে পূবে অর্থাৎ বাংলায় আগমন নারায়ণনের।
১৯৮৯ সালে ইসরোর বিজ্ঞানী হিসাবে খড়্গপুর আইআইটি থেকে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন নারায়ণন। ওই বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। এই বিষয়ে আইআইটি খড়গপুরের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক অধ্যাপক ড. অনুপম বসু বলেন, "খুব ভালো খবর। তাঁর নেতৃত্বে মহাকাশ গবেষণা নিশ্চয়ই অন্য মাত্রা পাবে। ভি নারায়ণন ইসরো এবং মহাকাশ দপ্তরের সচিবের দায়িত্ব পাওয়ায় গর্বিত বোধ করছি।" আইআইটি ক্যাম্পাসের বর্তমান ছাত্ররা গর্বিত অতীতকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। শীতের ক্যাম্পাসে বইছে উষ্ণ আত্মশ্লাঘার হাওয়া।