অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: ভুয়ো চাকরি দেওয়ার নামে বড়সড় চক্র ভেস্তে দিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) জলঙ্গির পাকুড়দিয়াড়ে বাঁশবাগানের মধ্যে রীতিমত প্যান্ডেল তৈরি করে, তাতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ (Interview) নেওয়া হচ্ছিল। গোপন সূত্রে সেই খবর জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে জলঙ্গির ওসি কৌশিক পালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে চাকরির ইন্টারভিউ নেওয়া সাহাবুল শেখকে গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনায় রীতিমতো ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবদের জলঙ্গির পাকুরদিয়াড়ে। স্থানীয় ইসমাইল শেখ জানান, “চাকরি দেওয়ার নামে চিটারি করে গ্রামের নাম বদনাম করছে ওই সাহাবুল। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।”
জানা গিয়েছে, সাহাবুল ইসলাম এর আগেও চাকরি দেওয়ার নাম করে ভুলিয়ে বেশ কয়েকজন বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বৃহস্পতিবারও বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছিল। তার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেশ কয়েকজন সুসজ্জিত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে বসানো হয়েছিল। বাঁশবাগানের মধ্যে তৈরি প্যান্ডেলে বাইরে থেকে চারচাকার গাড়ি ও বেশ কিছু মোটর বাইকে বেকার যুবকদের আসতে দেখে গ্রামের মানুষের সন্দেহ হয়। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে জানতে পারেন, সেখানে চাকরির ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা চলছে। তাতে গ্রামের মানুষের সন্দেহ হয় এবং তারা জানান যেখানে সরকারিভাবে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে বেকাররা চাকরি পাচ্ছেন না, সেখানে কী এমন ব্যবস্থা আছে যে প্যান্ডেলে ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি দেওয়া হচ্ছে? বিষয়টি তাদের ভুয়ো মনে হওয়ায় তাঁরা দ্রুত জলঙ্গির পুলিশকে খবর দেন। তার ভিত্তিতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে পুলিশের চক্ষুচড়ক গাছ অবস্থা।
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালিকে উত্তপ্ত করতে ‘নন্দীগ্রাম মডেল’! বিজেপির ষড়যন্ত্র ফাঁস করে অডিও প্রকাশ কুণালের]
এদিকে পুলিশ দেখেই ভুয়ো মাজিস্ট্রেটরা পালিয়ে যায়। পালানোর চেষ্টা করে উদ্যোক্তা সাহাবুল শেখও। কিন্তু গ্রামবাসীদের প্রচেষ্টা ও পুলিশের তৎপরতায় সাহাবুল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগও করা হয়েছে। জিজ্ঞাসায় সাহাবুল শেখ জানিয়েছেন, ইন্দিরা গান্ধীর আমলের বিশ দফা কর্মসূচির বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলার বিষয়ে কিছু কাগজপত্রে সই স্বাক্ষর করার জন্য এসব লোকদের ডাকা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: ‘রাজনীতি আমার জন্য নয়, ইস্তফাপত্র দিয়েছি’, মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর বিস্ফোরক মিমি]
যদিও পুলিশের দাবি, ধৃত ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলছে। ওই ব্যাপারে বাজেয়াপ্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ধৃত ব্যক্তিকে শুক্রবার আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ারও আবেদন রাখা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ জানতে পেরেছে ঘটনায় শুধু সাহাবুল জড়িত নয়। এর পিছনে বড় মাথা আছে। এবং এই চক্রের একটি শাখা সাঁইথিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।