সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বারবার দলবদল। মেরুকরণের রাজনীতি। উসকানিমূলক ও বিতর্কিত চোখা চোখা কথা বলে সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকার চেষ্টা। কখনও পুলিশ-প্রশাসন, কখনও দলের নেতাদের আক্রমণ করে কুকথার ফুলঝুরি। অভিযোগ, প্রতিবারই তাঁর মূল টার্গেট থাকে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি। আর এবার তো একেবারে বাবরি মসজিদ গড়ার 'সংকল্প'। সবমিলিয়ে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের দ্বিচারিতার ঘটনায় প্রবল তিতিবিরক্ত মুর্শিদাবাদ। অন্যদিকে, বিজেপিকে তোল্লাই দিতেই হুমায়ুনের এহেন তৎপরতা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ভোট আসলেই হুমায়ুন কবীর দলবদল করেন বলে একের পর এক তথ্য ও ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারাই। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে হুমায়ুনের ছবি তো রীতিমতো ভইরাল। এর আগে কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে তৃণমূল, পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লোকসভা ভোটেও লড়ে গোহারা হন। আবারও তৃণমূলে ফিরে আসেন।
হুমায়ুন কবীরের বিজেপিতে যোগদানের ছবি
কিন্তু এবার বলছেন নিজেই দল। গড়বেন। রাজনৈতিক বংবদলের ঘটনায় প্রবল বিরক্ত মুর্শিদাবাদের ভোটাররা বিষয়টিকে যে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তা শুক্রবার স্বীকার করেছেন কংগ্রেস। সিপিএম ও তৃণমূল নেতারা। গত কয়েকমাসে নানা দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রখছিলেন বলেও অভিযোগ। তৃণমুল সাসপেন্ড করার পর বিষায়কপদ ছাড়বেন বলে ঘোষণা করলেও শুক্রবার আর কলকাতায় পা রাখেননি হুমায়ুন। বরং যেখানে মসজিদ গড়বেন বলেছিলো, সেই জমি তিনি ঘুরে দেখেছেন। ২৪ ফটা আগের ঘোষণা থেকে সরে এসে হুমায়ুন বলেছেন, "এখনই নয়, তবে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই তৃণমুল ছেড়ে দেব।"
তাৎপর্যপূর্ণ হল, মসজিদ তৈরি নিয়ে এদিন হুমায়ুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট হস্তক্ষেপ করেনি। মুর্শিদাবাদে শান্তি বজায় রাখার বায়িত্ব রাজ্যের উপরই ছেড়েছে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। হুমায়ুনকে এক হাত নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি। বলেন, "বেআইনিভাবে কোনও মসজিদ উঠতে পারে না। মসজিদ নির্মাণের জন্য রেজিস্ট্রেশন চাই। ধর্মপ্রাণ কোনও মুসলিম মানুষ বেআইনি মসজিদ সমর্থন করে না। কিছু মিডিয়া 'পাম্প' খাইয়ে বেলুন ফোলাচ্ছে। এরপরই হুমায়ুনের আরেক কীর্তি ফাঁস করে অধীর বলেন, "গত লোকসভা ভোটে দাঁড়ানোর জন্য হুমায়ুন দিল্লিতে আমার বাড়ি গিয়েছিল। রেজিনগরের ছেভিয়ানিতে বাবরি মসজিদের যেখানে শিলমাসে হবে, পাশের বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকর আতঙ্কিত বলে প্রশাসনকে জানিয়েছেন। হুমায়ুন কি আইএসএফে যোগ দেবেন। বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির জবাব, "কেউ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে এলে আইএসএফে তাঁর ঠাঁই নেই।"
