দেবব্রত মণ্ডল, সুন্দরবন: বনবিবির মন্দিরে পুজো দিয়ে মধু সংগ্রহ করতে নামলেন মৌউলেরা। মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা যেমন বাড়ানো হয়েছে তেমনি বাড়ছে মধুর দাম। যার ফলে খুশি মধু সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত থাকা মৌউলেরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনদপ্তর ও ব্যাঘ্র প্রকল্প মিলিতভাবে মধু সংগ্রহের কাজ করে থাকে। তবে আলাদা আলাদাভাবে অনুমতি পত্র জমা নিয়ে তবেই জঙ্গলে যাওয়ার পারমিশন দেওয়া হয় ব্যাঘ্র প্রকল্প বনদপ্তরের তরফ থেকে। আগামী এপ্রিলের ৫ তারিখ থেকে শুরু হবে ব্যাঘ্র প্রকল্পে মধু সংগ্রহের কাজ। অন্যদিকে আজ থেকে সুন্দরবনের বনদপ্তরের অধীনে থাকা জঙ্গলগুলিতে মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করল মৌউলেরা। বনদপ্তরের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত মধু সংগ্রহকারীদেরকে দেওয়া হয়েছে অনুমতি পত্র।
ব্যাঘ্র প্রকল্প বনদপ্তরের মিলিয়ে এবছর প্রায় ১৫০ স্ত্রী নৌকাকে মধু সংগ্রহের জন্য অনুমতি পত্র দেওয়া হবে। বনদপ্তরের তরফ থেকেই ইতিমধ্যেই ৯১ টি দলকে মধু সংগ্রহের জন্য অনুমতি পত্র দেওয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে মধুর সরকারি দামও। গত বছর ২৬৫ টাকা থাকলেও এ বছর তার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। ১০ মেট্রিক টন মধুর লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে বনদপ্তর এলাকাতে। মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কেউ বাঘের আক্রমণে নিহত হলে ২ লক্ষ টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এমনটাই জানানো হয়েছে বনদপ্তর এর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন দপ্তরের তরফ থেকে।
[আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ের কাছে হারের পরে বিশাল অঙ্কের জরিমানা গিলকে, কিন্তু কেন?]
এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, সব মিলিয়ে গত বছর ১৭ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ বছরও দশ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলো তা যথেষ্ট বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। মধুচুরি রুখতে এবং ডাকাতদের হাত থেকে মৌউলেদের রক্ষা করতে অতিরিক্ত বনদপ্তরের কর্মীদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন এলাকাগুলিতে। ব্যাঘ্র প্রকল্পে আগামী সপ্তাহে শুরু হবে এই কাজ। দুটি ধাপে দেওয়া হবে মধু সংগ্রহের অনুমতি পত্র। সজনেখালি এবং বাগনা রেঞ্জ অফিস থেকে এই অনুমতিপত্র পাবেন মধু সংগ্রহকারীরা।
বনদপ্তর এবং ব্যাঘ্র প্রকল্প সকলেই মধুর দাম বাড়ানোয় খুশি সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারীরা, মধু সংগ্রহকারী শিবু মণ্ডল, সনাতন জোরদারবা বলেন, মধু সংগ্রহ করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। তাই দাম বাড়ায় যথেষ্টই খুশি আমরা। আশা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অধিক মধু সংগ্রহ করতে পারব। মধু সংগ্রহ করার পর প্রতিটি নৌকাকে বনদপ্তরের অফিসে নিয়ে আসতে হয়। সেখানে মধু ওজন করে তাদেরকে টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। তবে সরকারিভাবে আগে মোম কেনার ব্যবস্থা থাকলেও এখন মোম কেনা হয় না।বনদপ্তরের তরফ থেকে অনুমতি পত্র দেওয়ার সাথে সাথেই দেওয়া হচ্ছে মুখোশ, স্যানিটাইজার, গ্লাভস ও অন্যান্য সরঞ্জাম।