অভিরূপ দাস: পাঁচটা ফোন নম্বর। চারটে নম্বর মোবাইলের, একটি টোল ফ্রি। সঙ্গে একটি মোবাইল অ্যাপ। স্বাস্থ্যসাথী প্রত্যাখানের রোগ সারাতে মোক্ষম দাওয়াই হয়ে এবার হাজির ছ’টি নম্বর। এবার কোনও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi) নিতে না চাইলে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই খাস স্বাস্থ্য কমিশনে নালিশ জানাতে পারবেন গ্রাহক। অভিযোগ প্রমানিত হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল হবে। এহেন ব্যবস্থার সুবাদে রাজ্য সরকারের চিকিৎসা বিমাটি সর্বত্র গ্রাহ্য হবে বলে আশা স্বাস্থ্য মহলের।
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি ছাড়াও ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের অধীনে রয়েছে ২৩৩০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী ‘স্বাস্থ্যসাথী’ স্মার্ট কার্ড চালু করার কথা ঘোষণা করেন। দ্রুত এই কার্ডের কাজ শুরু হয়ে যায়। ইতিমধ্যে রাজ্যে আড়াই কোটিরও বেশি পরিবার এই কার্ড করিয়েছেন। বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যায় এই কার্ডে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে ১৯০০-র বেশি চিকিৎসা প্যাকেজ রয়েছে। অভিযোগ, নানান অছিলায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফিরিয়ে দিচ্ছে কয়েকটি হাসপাতাল। সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর এই দু’মাসে এ ধরণের তেরোটি অভিযোগ জমা পরেছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে।
[আরও পড়ুন: একই সিরিঞ্জ দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে করোনার টিকা, চার কর্মীকে শোকজ স্বাস্থ্যদপ্তরের]
উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। তাহলে লাইসেন্স বাতিল হবে ওই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বুধবার টোল ফ্রি নম্বর চালু করল পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। সে টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০৩৪৫–৫৩৮৪। এ বাদ দিয়েও চারটি হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) নম্বর চালু করেছে কমিশন। তা হল, ৯০৭৩৩১৩২১১, ৯৫১৩১ ০৮৩৮৩, ৮৩৩৪৯০২৯০০, ৯৮৩০১৬৪২৮৬। যদি কোনও চিকিৎসা সংস্থা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান করে তবে ঘটনাস্থল থেকেই এই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানানো যাবে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে কমিশন। এছড়াও রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে মে আই হেল্প ইউ, অথবা মোবাইলে স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপ নামিয়েও অভিযোগ জানানো যাবে। এদিন সাতটা স্বাস্থ্যসাথী অভিযোগের শুনানি হয় রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে।
কমিশন চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসে ১০ টি অভিযোগ এসেছিল। অক্টোবরে তিনটি অভিযোগ এসেছে। কমিশন মনে করছে, অভিযোগ কমার কারণ, ধীরে ধীরে সচেতন হচ্ছে হাসপাতাল। তবে উৎসবের মরশুম বলে অভিযোগ কম এসেছে এমনটাও মনে করছেন কেউ কেউ। কমিশন মনে করছে, দ্রুত রোগ নির্ণয় করে রোগীকে নির্দিষ্ট প্যাকেজের আওতায় আনলে অহেতুক খরচের বোঝা কমবে। আবার দ্রুত ঠিকঠাক চিকিৎসা শুরু করলে রোগীও তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারবেন।