শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সাগরদিঘিতে (Sagardighi) কংগ্রেসের জয় এবং তৃণমূলের হারকে শাসকদলের কাছে বিরাট ধাক্কা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা। বলা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের আস্থা হারিয়েছে তৃণমূল। আবার শাসকদল হার মেনে নিলেও পালটা যুক্তি দিচ্ছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, সাগরদিঘিতে বাম এবং কংগ্রেসের (Congress) অনৈতিক জোট হয়েছে। বিজেপি নিজেদের ভোট কংগ্রেসে পাঠিয়ে কংগ্রেসকে জিতিয়ে দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট অভিযোগ, কংগ্রেস সাগরদিঘির ভোটে জিতলেও নৈতিকভাবে হেরে গিয়েছে। বিজেপির ভোটে জিতেছে কংগ্রেস। মমতার (Mamata Banerjee) অভিযোগ, কংগ্রেস নিজেদের বিজেপি-বিরোধী বলার অধিকার হারিয়েছে। এই ধরনের জোট হলে কংগ্রেস কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? আমাদের কাছে এটা শিক্ষা। আমাদের কংগ্রেস এবং সিপিএমের (CPIM) কথা শোনা উচিত না। তবে তৃণমূল এই তিন দলকে একসঙ্গে হারানোর জন্য প্রস্তুত।
[আরও পড়ুন: ডাহা ফেল বাম-কংগ্রেস জোট, কোনওক্রমে জয় পেয়ে ফের ত্রিপুরার ক্ষমতায় বিজেপি]
কিন্তু বাস্তব কী? কী বলছে সংখ্যাতত্ত্ব? ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে যে তৃণমূল ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিল, মাত্র দেড় বছরে তাঁরাই ২২ হাজার ভোটে হারল কীভাবে? হিসাবে বলছে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল (TMC) পেয়েছিল ৯৫ হাজার ১৮৯টি ভোট। একুশের বিধানসভায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবির পেয়েছিল ৪৪ হাজার ৯৮৩টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৩৬ হাজার ৩৪৪ ভোট। অর্থাৎ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ফারাক ছিল ৫৮ হাজার ৮৪৫ ভোট।
[আরও পড়ুন: ভণ্ড সমাজতন্ত্রের প্রয়োজন নেই, রামরাজ্যের পথে এগোবে ভারত, ঘোষণা যোগীর]
এবারের উপনির্বাচনে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস পেয়েছে ৮৭ হাজার ৬১১টি ভোট। তৃণমূল পেয়েছে ৬৪ হাজার ৬৩১। আর বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২৫ হাজার ৭৯৩ ভোট। তৃণমূল শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে সাগরদিঘিতে অনৈতিক ভাবে বিজেপি এবং কংগ্রেস আঁতাঁত করে আসছে। বাস্তব পরিসংখ্যানও বলছে বিজেপির ভোটের একটা বড় অংশ এবার কংগ্রেসে গিয়েছে। যে কারণে কংগ্রেসের ভোট অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। আর বিজেপি অনেক পিছিয়ে নেমে এসেছে তৃতীয় স্থানে। কংগ্রেস-বিজেপির আঁতাঁত এই পরিসংখ্যানে অনেকটাই স্পষ্ট। আবার এটাও সত্যি যে, কিছুটা হলেও ভোট কমেছে তৃণমূলের। কিন্তু তৃণমূলের যুক্তি, সব বিরোধী দল একত্রিত হওয়ায় জোট প্রার্থীর পক্ষে কিছুটা হাওয়া তৈরি হয়েছিল। সেটা সাহায্য করেছে হাত শিবিরকে। তাছাড়া সার্বিকভাবে এই ফলাফলকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছে না শাসকদল। তাঁরা এই ফলাফলকে বিক্ষিপ্ত ঘটনা হিসাবেই দেখছে।