স্টাফ রিপোর্টার: অতিবৃষ্টির জেরে প্রবল জলের চাপ সামাল দিতে গিয়ে বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। তার ফলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বানভাসি অবস্থা। বৃষ্টি থেমেছে। ফলে আর নতুন করে জল বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছে নবান্ন। তবে জলাধারগুলি থেকে আরও জল ছাড়ার আশঙ্কা থাকছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলার মন্ত্রীদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
নবান্ন সূত্রে খবর, মানুষের যাতে ত্রাণের কোনও অভাব না হয় তার ব্যবস্থা করতে মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যে সমস্ত জেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য মৃতদের তালিকা তৈরি করতে বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছেন। নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিটি বিষয়ে খবর রাখছেন সেচ, ত্রাণ, বিপর্যয় দপ্তরের কর্তারা। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী বুধবার একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ লাগোয়া গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর এই ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সেটি নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, তা সময় যত এগোবে তত স্পষ্ট হবে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা গণেশচন্দ্র দাস জানিয়েছেন, সেক্ষেত্রে ফের নতুন করে বুধবার বিকেলের পর থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের বিষয়টি নির্ভর করছে ঘূর্ণাবর্তটি কতটা গভীর রূপ নেবে তার উপর। সেই দিকেই আপাতত নজর রেখেছেন আবহাওয়াবিদরা।
[আরও পড়ুন: ‘দিলীপদা রগড়ে দেবে’, অভিনেত্রী Paayel-এর খোলামেলা পোশাক দেখে আক্রমণ নেটিজেনদের]
নবান্ন সূত্রে খবর, এদিন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি (DVC)। বৃষ্টি থামলেও ভিনরাজ্যে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে আরও জল ছাড়া হতে পারে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে প্রায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মূলত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ার জেরেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ যাতে দ্রুত করা যায়, তার জন্য জেলার মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণের ব্যবস্থা প্রতিটি জেলাতেই পর্যাপ্ত রয়েছে। যে সমস্ত শিবিরে মানুষ রয়েছে, সেই শিবিরগুলিতে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রীর যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখবেন জেলার মন্ত্রীরা। এদিনই ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
জেলা সূত্রে খবর, ঘাটালের (Ghatal) জল নেমেছে। সামান্য উন্নতি হয়েছে পরিস্থিতির। যদিও শিলাবতীর জল ঢোকায় বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়। অন্যদিকে, রূপনারায়ণের বাঁধ ভেঙে জল ঢোকায় খানাকুল প্লাবিত হয়ে যায়। পরিস্থিত সামলাতে নামে সেনা। নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার খানাকুল থেকে ৩১ জনকে ‘এয়ার লিফটিং’ করে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হেলিকপ্টার। বর্ধমানের পরিস্থিতিও আগের থেকে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের আশা, ফের বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি এবার ক্রমশ উন্নতি হবে। এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, এই সরকারের আমলে এরাজ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, সেচমন্ত্রী থাকাকালীন দপ্তরে ব্যয়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল।