রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ৬ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের পর বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ। আর এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজিত জনতার বেদম প্রহারে মৃত্যু হল অভিযুক্তের। শুক্রবার জোড়া ঘটনায় শোরগোল আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার খগেনহাট এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ফালাকাটা থানার আইসি সমিত তালুকদার বলেন, “শিশুর মৃতদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আমরা গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। তদন্তের স্বার্থে এর থেকে বেশি কিছু বলা যাবে না।”
জানা গিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে মনা রায় নামে বছর বিয়াল্লিশের এক ব্যক্তির। তাকেই শিশুর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বলে দাবি এলাকাবাসীর। কুকীর্তির কথা সে স্বীকার করেছে। খগেনহাটে রাস্তার দুই পাড়ে বাড়ি মনা রায় ও নির্যাতিতা মৃত নাবালিকার। অভিযোগ, এদিন দুপুরের পর ওই নাবালিকাকে জিলিপি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় মনা রায়। তার পর থেকে ওই নাবালিকা নিখোঁজ ছিল। বিকেলের আগে বাড়ির কলে রক্তমাখা হাত ধুতে দেখা যায় মনাকে। সেসময় মৃত নাবালিকার ঠাকুমা তা দেখে ফেলেন। পরে তিনি অভিযুক্তের ঘরে ঢুকে নাতনির রক্তমাখা জামাকাপড় দেখতে পান। তখনই মনা রায়কে জাপটে ধরে চিৎকার করতে শুরু করেন ঠাকুমা।
ঘটনার জেরে প্রতিবাদে মুখর গোটা পাড়া। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এর পর সকলে এসে মনাকে চেপে ধরতেই সে ৬ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃতদেহ পুকুরে ফেলা হয়েছে বলেও মনা জানায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তবে পুলিশ আসার অপেক্ষা নয়, সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজন অভিযুক্ত মনাকে মারধর করতে শুরু করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুকুর থেকে নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকেও পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত নাবালিকার ঠাকুমা বলেন, “ওকে (মনাকে) রক্তমাখা হাত-পা ধুতে দেখে আমার সন্দেহ হয়। তার পর ওর ঘরে গিয়ে দেখি নাতনির রক্তমাখা জামাকাপড়। তখন ওকে জাপটে ধরে চিৎকার করতে শুরু করি। সকলের সামনে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে ও।“
গত ১৪ অক্টোবর জয়গাঁতে সাত বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের পর মৃতদেহে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় চারজনকে পরে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটল জেলায়। তবে এবার আর বিচারের জন্য অপেক্ষা করেনি জনতা। হাতে আইন তুলে নিজেরাই পিটিয়েই অভিযুক্তকে মেরে ফেলেছে।