ধীমান রায়, কাটোয়া: পারিবারিক কালীমন্দিরে দীর্ঘ আট বছর ধরে পৌরোহিত্য করতেন। বাড়ি থেকে আসার পর ওই বাড়িতেই পোশাক বদলে ধূতি পরে উত্তরীয় গলায় পুজোয় বসতেন। তখন পরিবারের বধূ দেবীর পুজোর জোগাড় করতে ব্যস্ত। পোশাক বদলের অছিলায় দোতলার ঘরে গিয়ে যজমানের ১২ বছরের নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার ঘটনায় গ্রেপ্তার পুরোহিত।
পুলিশ জানায়, ধৃত ষাটোর্ধ্ব বিমল কুমার রায়। ভাতারের রায়রামচন্দ্রপুর গ্রামে তার বাড়ি। পৌরহিত্যের পাশাপাশি বিমল রায় তবলাবাদক বলেও পরিচিত। গুসকরা শহরের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পারিবারিক কালীপুজো হয়। বসতবাড়ি লাগোয়া মন্দির। সারাবছর দেবীর নিত্যসেবা হয়। ওই বাড়িতেই আট বছর ধরে পৌরোহিত্য করেন বিমল কুমার রায়। সাইকেল চড়ে গুসকরা শহরে যাতায়াত করতেন। তবলার টিউশন এবং পৌরহিত্য করতেন। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
নাবালিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পুজোর পর বিমল রায় বাড়ি চলে যান। শুক্রবার সকালে ফের পুজো করতে যান। তার আগেই গৃহকর্ত্রী পুজোর জোগাড় করতে ব্যস্ত। মন্দিরে বসে তিনি নৈবেদ্য সাজাচ্ছিলেন। গৃহকর্তা দোকানে ছিলেন। নাবালিকার মা বলেন,"পুরোহিতকে কাকা বলতাম। কাকা আসার পর আমাদের ঘরের একতলার বারান্দায় পোশাক ছাড়তে যান। ওখানেই পুজো করার ধূতি রাখা থাকত। আমি তখন মন্দিরে। দোতলার ঘরে আমার মেয়ে ছিল। ছয় বছরের ছেলে বাড়িতে খেলা করছিল।"
অভিযোগ, পোশাক ছাড়তে গিয়ে পুরোহিত দোতলার ঘরে চুপিসারে চলে যায়। তার পর নাবালিকার হাতে একটি কেক দেন। তার সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করেন। নাবালিকা কোনওক্রমে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে মাকে গোটা ঘটনাটি জানায়। মেয়ের মুখে অভিযোগ শুনে বধূ পাড়াপড়শিদের ডাকেন। পাড়ার লোকজন তাকে ঘিরে ধরে। শুরু হয় চড়, থাপ্পর। তার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আটক করে নিয়ে যায় অভিযুক্তকে। গুসকরা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।