সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: বাঙালির সঙ্গে চায়ের (Tea) সম্পর্ক বরাবরই দারুণ। ‘সকালের কৈশোরে’ কিংবা ‘সন্ধের অবকাশে’ ‘এক কাপ চায়ে’র যে আকুতি, তা চিরন্তন। আর ফুটপাথে চায়ের দোকান মানেই জমজমাট আড্ডা। গানবাজনা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক চর্চা সমস্ত কিছুই হয় এই চায়ের দোকানগুলিতে। সাধারণত চায়ের দোকানগুলোতে মনোরঞ্জন করার জন্য থাকে বিভিন্ন সিনেমার পোস্টার। তবে এই চেনা ছবির ব্যতিক্রম নদিয়ার মাজদিয়া স্টেশনে ‘গিরিদা’র চায়ের দোকান। এখানে চা খেতে এলে জানা যাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক তথ্য। বাড়বে সাধারণ জ্ঞান (General Knowledge)। আর এহেন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে সকলের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন দোকানি গিরিধর বিশ্বাস।
নদিয়ার (Nadia) মাজদিয়া স্টেশনের ধারেই গিরিধর বিশ্বাসের চায়ের দোকান। এ যেন জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রীদের নাম ও কার্যকালের মেয়াদ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মিলবে। দোকানি গিরিধর বিশ্বাসের বক্তব্য, তিনি অন্য মানসিকতার মানুষ। তাঁর দোকানে চা খেতে আসেন অনেক ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী, শিক্ষক। দোকানে রাখা প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির ছবিগুলি দেখে উৎসাহী হন অনেক ছাত্রছাত্রীই। ছবি দেখে, নোট করেন তাঁরা। পরে তাঁদেরই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে তা সহায়তা করে। তিনি বলছেন, অনেক কষ্ট করে মনীষী, নেতা-মন্ত্রীদের ছবি তাঁর চায়ের দোকানে রেখেছেন। আর তাতেই উপকার হচ্ছে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষজনের। এই ভেবে মানসিক দিক থেকে খুশি তিনি।
[আরও পড়ুন: চাহালের দুরন্ত ওভারেও ঘুরল না ভাগ্যের চাকা, পুরানের চওড়া ব্যাটে ধরাশায়ী টিম ইন্ডিয়া]
গিরিধরবাবুর ইচ্ছা, দুস্থ, দরিদ্র মানুষজনকে বিনামূল্যে চা খাওয়ানোর। এই ইচ্ছের পিছনেও অবশ্য ইতিহাস আছে। একসময় অসুস্থ অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। চা খাওয়ার ইচ্ছে হলেও কেউ তাঁকে বিনা পয়সায় চা খাওয়াননি। তারপরই মনস্থির করেন, ভিখারি গরিব, যাঁরা অর্থের অভাবে চা কিনতে পারেন না, তাঁদের বিনা পয়সায় চা খাওয়াবেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এখন গিরিধর বিশ্বাস নেহাত একজন চা দোকানি নন, এলাকার ‘হিরো’।
