অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: পরিত্যক্ত বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসছিল কান্না। কিন্তু ওই বাড়িতে যে কেউ থাকে না। তাই রাতে গ্রামের মানুষজন ওই বাড়িতে ঢুকতে সাহস পাননি। ফলে সকালে বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই চমকে উঠেন গ্রামবাসীরা। দেখেন লাল কাপড়ে মোড়া অবস্থায় একটি নবজাতক শিশু কাঁদছে। সোমবার পুরুলিয়ার (Purulia) মানবাজার ২ ব্লকের বড় মামরো গ্রামের এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রবিবার সকাল ৬ টা নাগাদ এই ঘটনার খবর দেওয়ার পরেও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি বোরো থানার পুলিশ বা মানবাজার ২ ব্লক প্রশাসনের কেউ। অবশেষে সকাল দশটা নাগাদ বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে ওই নবজাত শিশু কন্যাটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে মানবাজার ২ ব্লকের বিডিও গোলাম গোসল আজম বলেন,” চার ঘণ্টা নয়। কিছু প্রোটোকলের কারণে হাসপাতাল থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লেগেছে।”
[আরও পড়ুন: জ্বরের শিশুকে ভুল করে জলাতঙ্কের ইঞ্জেকশন! গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত নার্স]
জন্ম দেওয়ার পরেই সন্তানকে ফেলে চলে গিয়েছে মা। সেই রাত থেকেই সমানে কেঁদে চলছে সদ্যোজাত শিশুটি। পরিত্যক্ত ওই বাড়ির মালিক নবীন মান্ডি জানান,”৮ বছর আগে এই বাড়ি ছেড়ে গ্রামের অন্যত্র থাকা শুরু করি। আজ সকালে চাষের কাজে থাকার সময় ঘটনার খবর জানতে পারি। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেও ওই শিশুটিকে উদ্ধার করতে কেউ আসেনি।”
বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিএমওএইচ হরিপদ মণ্ডল বলেন,”সাড়ে দশটা নাগাদ শিশুটি উদ্ধার হয়। শিশুটির ওজন আনুমানিক এক থেকে দেড় কিলোগ্রাম। সদ্যোজাত শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো এখানে সেভাবে নেই। তাই কয়েক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর শিশুটিকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো বলেন,”শিশুটি সুস্থ থাকলে মঙ্গলবার আমরা তাকে হোমে রাখার ব্যবস্থা করবো।” তবে এদিন দেরিতে ওই শিশু উদ্ধার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামের একাংশ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটা শিশু রাত থেকে মাটিতে স্যাঁতসেতে অবস্থায় পড়ে কাঁদছে। আর স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন প্রোটোকল দেখছেন।
