সুমন করাতি, হুগলি: নজরুল ইসলামের (Nazrul Islam) ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের রিমেক নিয়ে নিন্দার ঝড় চারপাশে। দেশপ্রেমের আগুন জ্বালানো গান অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালকের রিমেকে কীভাবে বিকৃত হয়েছে, তা বোধহয় সংস্কৃতিমনস্ক কোনও বাঙালিরই জানতে বাকি নেই। এবার আরও এক মণীষীকে নিয়ে বিতর্ক (Controversy) তৈরি হল। এবং তা খোদ বঙ্গভূমে! হুগলির ভদ্রেশ্বরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্যান্ডেল বাঁধার সময় গলায় দড়ি পড়ল কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (Sarat Chandra Chattopadhyay)! তাঁর আবক্ষমূর্তির গলার কাছ দিয়ে প্যান্ডেলের বাঁশ লাগানো হয়েছে, সেখানেই দড়ি। এমন ঘটনার ছবি ভাইরাল (Viral)সোশাল মিডিয়ায়। পুজোর উদ্যোক্তারা অবশ্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন।
কালীপুজো, ভাইফোঁটা পেরলেই নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagaddhatri Puja)। আর হুগলি মানেই জগদ্ধাত্রী পুজোর রমরমা। ভদ্রেশ্বর খেয়ালি সংঘের জগদ্ধাত্রী পুজো হয় ভদ্রেশ্বর (Bhadreswar) পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড শরৎ সরণিতে। সেখানেই গত কয়েকদিন ধরে মণ্ডপ তৈরির জন্য বাঁশ বাঁধার কাজ করছিলেন ডেকরেটর্সের কর্মীরা। তাতেই শরৎচন্দ্রের আবক্ষ মূর্তিটিকে বাঁশ ও দড়ি পড়ে। পথচলতি কেউ সেই ছবি তুলে সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) পোস্ট করতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। এভাবে একজন সাহিত্যিককে অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নেটিজেনরা। নানা মন্তব্যে ভরে যায় সোশাল মিডিয়া।
[আরও পড়ুন: ‘এজেন্সির সঙ্গে লড়তে গেলে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে’, তৃণমূলকে ‘পাঠ’ অর্জুনের]
খেয়ালি সংঘের এক সদস্য কল্যাণ চক্রবর্তী জানান, “এই ঘটনায় তাঁরা খুবই লজ্জিত। এই ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়নি, এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল। যার জন্য তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি বলেন, “এই ঘটনা ঘটার পনেরো মিনিটের মধ্যে আমার কাছে খবর আসে। আমি নিজে ঘটনাস্থলে এসে ডেকরেটার্সের কর্মীদের ওই দড়ি ও বাঁশ খুলে দিতে বলি। তবে যারা এই ছবি ভাইরাল করেছে, তারা ঠিক করেনি। এটা শিক্ষিত সমাজের সংস্কৃতি নয়। তবে ভুলটা ভুল। তার জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। এটা যারা করেছে তারা বারোয়ারিকে ছোট করার জন্য করেছে। কারণ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর একটা ঐতিহ্য আছে।”
[আরও পড়ুন: প্রাপ্য মেটাচ্ছে না কেন্দ্র, অভিষেকের পথেই দিল্লি অভিযানে বাম শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী]
প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি বিজেপি (BJP) নেত্রী বন্দনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি এই ক্লাবের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছর যুক্ত ছিলাম। এরা এই ধরনের নয়। তবে যাঁরা এই কাজ করেছে তারা হয়তো মূর্তিটি কার সেই বিষয়ে অবগত নন। তাই এমন কাজ করে ফেলেছেন। যারা এই ছবি তুলে সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল করেছে, তাদেরও ভাবা উচিত ছিল যে, এই ছবি ছাড়লে বাংলার অপমান হবে। তাদের উচিত ছিল ক্লাব ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলা।”