গোবিন্দ রায় ও রাজ কুমার: হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও বিশেষ লাভ হল না। আপাতত বন্ধই থাকবে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরের রিসর্ট, হোমস্টে, রেস্তরাঁ। সোমবার সাফ জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি ওই সংরক্ষিত এলাকায় নদীর তীরে ক্রাশার চলছে কিনা তা নিয়ে জলপাইগুড়ির জেলা শাসককে রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জানুয়ারি। তবে পর্যটনের ভরা মরশুমে হোটেল, রিসোর্ট বন্ধ রাখতে নারাজ পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বনদপ্তরের নির্দেশিকা মেনেই কিছু এলাকায় বুকিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
২০২২ সালের ৫ মে গ্রিন ট্রাইবুনালে (ইস্টার্ন জোন, কলকাতা) পরিবেশপ্রেমী সুভাষ দত্তের করা মামলায় বক্সাতে সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া। তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মধ্যে থাকা সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বনদপ্তর। তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ীরা। এদিন হোম স্টে এবং হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, জাতীয় পরিবেশ আদালতে শুনানির সময় তাদেরকে যুক্ত করা হয়নি। জাতীয় পরিবেশ আদালতের গঠিত কমিটি যথাযথ নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়নি। তাই এইগুলি বন্ধ করে দেওয়া সঠিক পদক্ষেপ হবে না। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সওয়াল-জবাবের মাঝেই জানান, জাতীয় পরিবেশ আদালতের সংগঠিত কমিটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই এলাকা সংরক্ষিত ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতাধীন অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়া রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এর পরই বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে সমস্ত হোটেল, হোম স্টে, রেস্তরাঁ। পরবর্তী শুনানি ১০ জানুয়ারি।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, ৭৬০ বর্গ কিলোমিটার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতাধীন। বনদপ্তরের ১৯৮৭ সালের নোটিফিকেশন অনুযায়ী জয়ন্তী, রায়মাটাং, লেপচাখা-সহ বিভিন্ন বনগ্রাম এই এলাকার বাইরে। ফলে ওই এলাকার হোম স্টে, হোটেল, রেস্তরাঁ বনদপ্তরের নির্দেশিকার আওতায় তারা আসবেন না। সেই কারণে তারা আগামিকাল থেকে পর্যটকদের বুকিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।