দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: জয়নগরে তৃণমূল (TMC) নেতাকে হত্যাকাণ্ড এবং ধারাবাহিক অশান্তির ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরনোর পরও কিনারা হল না। এই কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বহিরাগতদের এনে সুপারি দিয়ে কি খুন করা হয়েছে অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন লস্করকে? উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তবে একটা বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। অত্যন্ত সুপরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড (Murder)। এত নিখুঁত হত্যাকাণ্ড দীর্ঘ পরিকল্পনা ছাড়া হয় না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। সইফউদ্দিন খুন, গণপিটুনিতে অভিযুক্তের মৃত্যু, এলাকায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের ঘটনায় মোট ৩ টি পৃথক মামলা রুজু করেছে জয়নগর থানার পুলিশ।
সোমবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জয়নগরের (Jaynagar) দলুইখাঁকি এলাকা। বাঙালবাড়ি মোড়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শুটআউটে (Shootout) খুন হন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন লস্কর। ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে উন্মত্ত জনতার মারে প্রাণ হারায় অভিযুক্ত। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, খুনের ঘটনায় বহিরাগত যোগ রয়েছে। সুপারি কিলার দিয়ে সইফউদ্দিনকে খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে খুনের মাস্টারমাইন্ড যে নিঁখুত পরিকল্পনা করেই সইফউদ্দিনকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তদন্তকারীরা। আর সেই ব্লু প্রিন্টে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সইফউদ্দিনের রোজনামচাকে। অর্থাৎ কোন সময়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরন, কোন সময়ে মসজিদে যান, রেইকি করে এসব বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নিয়েই খুনের ছক সাজানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সেলাম ঠুকত পুলিশও! কে এই জয়নগরের ‘ডাকমাস্টার’ সইফউদ্দিন? ]
সইফউদ্দিনের রাজনৈতিক উত্থানই তাঁর প্রাণহানির কারণ বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা। সূত্রের খবর, অঞ্চল সভাপতি হিসেবে দলের জন্য প্রচুর অর্থ দিতেন সইফউদ্দিন। কলকাতার নেতারা কেউ সেখানে গেলে নিজের খরচে তাঁদের বিলাসবহুল রিসর্টে রাখতেন, মোটা অঙ্কের চাঁদা (donation) দিতেন, এলাকায় কোনও অনুষ্ঠান হলে সইফউদ্দিনের তরফে মিলত অনুদান। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এককথায় দুহাতে টাকা ওড়াতেন নিহত তৃণমূল নেতা। শুধু জয়নগর নয়, বারুইপুর, বকুলতলা এলাকাতেও প্রভাব ছিল তাঁর।
[আরও পড়ুন: শচীন-দ্রাবিড় নন, রাচীনের নামের নেপথ্যে অন্য কারণ! ফাঁস করলেন কিউয়ি তারকার বাবা]
সোমবার রাত ১০টা নাগাদ গ্রামে পৌঁছয় নিহত নেতার দেহ। সেখানে হাজির হন স্থানীয় তৃণমূলের কয়েকজন নেতা। হত্যার নেপথ্যে সিপিএমের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও তাঁর পরিবার ও দলের একাংশ এনিয়ে একেবারেই চুপ। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহ শাহরুল শেখ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনার সূত্র খুঁজছে পুলিশ।