শাহজাদ আলি, জঙ্গিপুর: এক দেবতার আগমনে অজস্র দেবদেবীর আবাহন। দুর্গা থেকে সরস্বতী বা অন্নপূর্ণা। কার্তিক অমাবস্যায় মহাকাল ভৈরবের পুজোর সময় এই জনপদে অন্তত পাঁচ শতাধিক দেবদেবী পুজো পান। সবার বাড়িতেই কোনও না কোনও পুজো। একদিনের জন্য অন্যরকম উৎসব মুর্শিদাবাদের সুতির বংশবাটিতে।
[মুসলিম বৃদ্ধের প্রতিষ্ঠিত কালীমাতার পুজো আজও হটনগরে]
বংশবাটি কৃষিপ্রধান এলাকা হিসাবে পরিচিত। গ্রামের কয়েকশো মানুষ কার্তিক মাসের অমাবস্যার দিকে তাকিয়ে থাকেন। কারণ তখন গ্রামে হয় মহাকাল ভৈরবের পুজো। আর এই পুজো ঘিরে প্রত্যেকের বাড়িতে বিভিন্ন দেবদেবীর আরাধনা। মনসা ও বিশ্বকর্মা বাদে সমস্ত দেবদেবী এই ধরাধামে পুজো পান। কোনও বাড়িতে হরপার্বতীর পুজো হয়, কোথাও অন্নপূর্ণা কোথাও আবার ব্রহ্মার। মহাকাল ভৈরবকে সম্মান জানতে তাঁর মূর্তি সবথেকে বেশি উঁচু করা হয়। এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা স্থানীয় হাওয়া হাওয়া ক্লাব। এবছর তা চল্লিশ বছরে পড়ল। বএিশ ফুটের মহকাল ভৈরবের মূর্তি গড়ার কাজ চলছে জোরকদমে। মূর্তি তৈরিতে বিচুলি বা খড় লেগেছে ৬ হাজার আঁটি, সুতলি ৯০ কেজি, ধানের তুষ ২ কুইন্টাল, বাঁশ লেগেছে তিরিশটি এবং পাঁচ গরুর গাড়ি মাটি ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিমা গড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা কনক মাঝি। গ্রামের পুজো বলে বিনা পারিশ্রমিকে শিল্পী মূর্তি বানাচ্ছেন। পুজোর বাজেট প্রায় ২ লক্ষ টাকা। কালীপুজোর রাতে যজ্ঞের সঙ্গে ধুমধাম করে পূজিতা হন বংশবাটি গ্রামের মহাকাল ভৈরব।
[পাহাড়ের চেয়ে ‘উঁচু’ প্রতিমা, ঝাড়গ্রামের আকর্ষণ ৬০ ফুটের কালী]
প্রথমবার প্রতিমার উচ্চতা ছিল মাত্র ২ ফুট। মহাকাল ভৈরবের পুজো তখন হয়েছিল রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে। তারপর ক্লাব কর্তারা মতবদল করেন। একলাফে ৩২ ফুটের মূর্তি গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই থেকে একই মাপের প্রতিমা গড়ে মহাকাল ভৈরবের পুজো হয়ে আসছে। সুবিশাল মূর্তি বির্সজনের ঝক্কি সামলাতে গ্রামের পুকুর পারে পুজো হচ্ছে। সেই শ্রাবণ মাসের সংক্রান্তির দিন থেকে মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আতশবাজির প্রদর্শনের পর মহাকাল ভৈরবকে দড়ি ও বাঁশ দিয়ে টেনে পুকুরের জলে নিরঞ্জন করা হয়। দেবী শ্মশানবাসী বলে ক্লাবকর্তারা মন্দির গড়ার চিন্তা ভাবনা করেননি। এক দিনের দেবতাকে বরণ করে নিতে তারা এখন মহাব্যস্ত। গোটা গ্রামে এখন উৎসবের তোড়জোড়।
The post জঙ্গিপুরে মহাকাল ভৈরবের সঙ্গে পূজা পান ৫০০ দেবদেবী appeared first on Sangbad Pratidin.
