সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘শান্তির নীড় কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে এসে আমি অত্যন্ত আনন্দ ও শান্তি অনুভব করছি’- ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথাগুলো বলামাত্রই হইহই আম্রকুঞ্জে। এমনিই বীরভূমের জন্য আজকের দিনটি স্পেশ্যাল। বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে আজ এক মঞ্চে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সেখানেই বাংলায় কথা বলে গোড়াতেই মন জয় করে নিলেন মোদি।
তবে বক্তৃতা শুরু করার আগেই তিনি জানালেন, তিনি একটি বিশেষ কারণে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন। কারণ রাস্তায় আসার সময় কিছু বাচ্চা ইশারায় তাঁকে জানিয়েছেন, পানীয় জল নিয়ে কষ্ট হচ্ছে। আচার্য হিসেবে এই ব্যবস্থা করা তাঁর দায়িত্ব। তাই তিনি আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিলেন। তারপর বললেন, “একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। কিন্তু এখানে আমি অতিথি নই। আচার্য হিসেবে এসেছি। গুরুদেবের পবিত্র ভূমিতে খানিকটা সময় যে কাটাতে পেরেছি এ আমার সৌভাগ্য। কোনও মন্দির প্রাঙ্গনে মন্ত্রোচ্চারণের সময় যে অনুভূতি হয়, আমার এখন সেই অনুভূতিই হচ্ছে।” কবিগুরু আজ সশরীরে না থেকেও যে প্রধানমন্ত্রীকে দারুণ প্রভাবিত করেছে তা এদিন তাঁর কথায় ধরা পড়ল। বললেন, “গাড়ি থেকে নেমে যখন মঞ্চের দিকে আসছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল কখনও এই ভূমিতেই তো গুরুদেবের পায়ের ধুলো পড়েছে। এখানেই হয়তো কোথাও বসে উনি কবিতা লিখেছেন। কখনও সুর রচনা করেছেন। কখনও হয়তো গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন কোনও বিষয়ে। কিংবা কোনও ছাত্রকে দেশের মানে বুঝিয়েছেন। আজ এখানে আমি এক পরম্পরার অংশ হয়েই এসেছি।” তিনি বললেন, যখনই অন্য কোনও দেশে গিয়েছি শুনেছি এখানে আগে গুরুদেব এসেছিলেন। এখনও গুরুদেবকে সেই সব দেশে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বললেন, গুরুদেবকে যদি গ্লোবাল সিটিজেন বলি তবে ভুল বলা কিছু হবে না।
সমাবর্তনে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের তিনি বললেন, “যাঁদের ডিগ্রি মিলল তাঁদের অভিনন্দন। ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা। তবে শুধু ডিগ্রি নয়, যা শিখেছেন, যা পেয়েছেন তা অমূল্য সম্পদ। গুরু শিষ্য পরম্পরা যেমন পুরাতন তেমনই আধুনিক। বৈদিক কালে ঋষি ও মুনিরা যা করেছিলেন আধুনিক ভারতে মনস্বী রবীন্দ্রনাথ তা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই ডিগ্রি তাই আপনাদের কাছে এক বার্তা। মানুষ হিসেবে কীভাবে উৎকর্ষতার শীর্ষে পৌঁছানো যায় এ তারই স্মারক।” ভারত-বাংলাদেশ পারস্পরিক সম্পর্কের কথাও এদিন উঠে এ আচার্যের কথায়। তবে এর পাশাপাশি ভারত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যবহার করে গ্রামকে স্বনির্ভর করা যায়, তারও দিশা দেখালেন। ১০০ গ্রামকে স্বনির্ভর করে তোলার ডাক দিলেন তিনি। তিনি বলেন, “গুরুদেব বলেছিলেন, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে। আমি বলছি, আপনারা এক পা এগোলে, সরকার আপনাদের দশ পা এগোতে সাহায্য করবে।”
The post ‘মন্দিরে আসার মতোই অনুভূতি হচ্ছে’, বিশ্বভারতীতে বাংলায় কথা বলে মন জয় মোদির appeared first on Sangbad Pratidin.
