shono
Advertisement

খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধলেও গুড় কই? পৌষপার্বণ নিয়ে চিন্তিত মহলদারেরা

বাঁকুড়ায় প্রচুর খেজুর গাছ, লিজ নিয়ে রস সংগ্রহে ভিনজেলার মানুষজন।
Posted: 04:05 PM Dec 03, 2023Updated: 04:05 PM Dec 03, 2023

দেবব্রত দাস, খাতড়া: সামনেই পৌষপার্বণ। খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধলেও চাহিদা অনুযায়ী গুড়ের (Nalen Gur)উৎপাদন হচ্ছে না। আর তা নিয়ে বিপাকে মহলদারেরা। দূরদূরান্ত থেকে বাঁকুড়ায় (Bankura)এসে খেজুর গাছ লিজে নিয়ে মহল তৈরি করেছেন মহলদারেরা। কিন্তু জাঁকিয়ে শীত না পড়ায় সেভাবে রস মিলছে না। ফলে ভালো গুড়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে মহল চালাতে ও নিজেদের খরচ সামলাতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। মাথায় হাত পড়েছে মহালদারদের।

Advertisement

হরেক রকমের সুস্বাদু পিঠের পরব বাঙালির ঘরে ঘরে। শীতের মরশুমে তাই পিঠে খাওয়ার জন্য খেজুর গুড়ের চাহিদা বাড়ে। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল সিমলাপাল থেকে বারিকুল, ইন্দপুর থেকে সারেঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে খেজুর গুড় তৈরির মহল। দূরদূরান্ত থেকে মহলদাররা এখানে খেজুর গাছ (Date tree) লিজ নিয়ে প্রথমে রস সংগ্রহ করেন। সেই রস থেকে গুড় তৈরি করেন। প্রতি বছর শত শত মহলদার তাই রুজির টানে এখানে ভিড় জমান।

[আরও পড়ুন: ‘সবচেয়ে বড় অপয়া’, তিন রাজ্যে বিজেপি এগোতেই গেরুয়া নেতার খোঁচা রাহুলকে]

চলতি বছরও তাঁরা বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে খেজুর গুড় সংগ্রহে এসেছেন। কিন্তু এখনও সেভাবে জাঁকিয়ে শীত পড়েনি। ফলে খেজুর গাছ থেকে রস উৎপাদন অনেকটাই কম। আর তাতেই মাথায় হাত পড়েছে মহলদারদের। লাভ তো দূরের কথা, এই অবস্থায় ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন তাঁরা। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের সিমলাপাল, খাতড়া, ইন্দপুর, তালডাংরা এলাকায় প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। এর পাশাপাশি রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, বারিকুল ও হিড়বাঁধ এলাকাতেও কমবেশি খেজুর গাছ রয়েছে। আশ্বিণ মাসের পর থেকেই দূরদূরান্তের বহু মহলদার এই এলাকায় আসেন। ব্যক্তিগতভাবে খেজুর গাছ প্রতি কোথাও দু’কেজি, আবার কোথাও দেড় কেজি গুড় দেওয়ার বিনিময়ে লিজ নেন তাঁরা।

কার্তিক মাস থেকেই গাছ ছুলে কাঠিতে হাঁড়ি লাগিয়ে খেজুর গুড় সংগ্রহ করা হয়। প্রথমদিকে রসের পরিমাণ কম মেলে। তবে দিন যত যায় শীত যত বাড়ে রসের পরিমাণ ততই বাড়ে। কিন্তু নভেম্বর মাস পার হয়ে ডিসেম্বর শুরু হলেও এবার খেজুর রসের উৎপাদন অনেকটাই কম বলে মহলদাররা জানিয়েছেন। আর এতে মাথায় হাত পড়েছে খেজুর গুড় তৈরির কাজে নিয়োজিত মহলদারদের।

[আরও পড়ুন: বিয়ের আংটি খুলে ফেললেন অভিষেক! বিচ্ছেদের বেনোজলে চুরমার ঐশ্বর্যর সংসার?]

ওন্দার বাসিন্দা সফিক মল্লিক দীর্ঘদিন ধরেই এই কাজের সঙ্গে জড়িত। সিমলাপালের নিমাইপুর, লক্ষ্মীসাগর এলাকায় ২০০টির বেশি খেজুর গাছ লিজ নিয়ে মহল তৈরি করেছেন তিনি। সফিক মল্লিক বলেন, “প্রতিবছর আমি এখানে মহল তৈরি করি। এবারও এসেছি। স্থানীয়দের কাছ থেকে লিজে গাছ নিয়ে ব্যবসা করছি। কিন্তু গাছ থেকে রসের উৎপাদন এবার অনেকটাই কম। ফলে রস বেশি না হওয়ায় গুড়ের উৎপাদন কম হচ্ছে। চাহিদা থাকলেও স্থানীয় বাজারে ৯০-১০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করছি। কিন্তু গুড়ের উৎপাদন না হলে লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা লিজ নেওয়ার জন্য ও এখানে থাকার জন্য যে টাকা ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে তা কীভাবে তুলব সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। এমন অবস্থা চললে অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে।”

মহলদার শেখ কিবরিয়া বলেন, “গত দেড় মাসে গাছ থেকে রস বেশি হয়নি। তাই গুড় সেভাবে তৈরি হয়নি। বিক্রি করে লাভ হয়নি। প্রতি মাসে একটা মহল চালাতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু এখনও সেই টাকা উঠছে না। শীত পড়লে রসের পরিমাণ বাড়ে। গুড়ের গুণগত মানও ভাল হয়। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছি। আর দিন পনেরো এমন চললে আমাদের পুরো লোকসান হয়ে যাবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার