অর্ণব দাস, বারাসত: ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির পচাগলা দেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) দোলতলায়। শনিবার পুষ্পক রেসিডেন্সি নামে আবাসন থেকে তরুণ স্বামী-স্ত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। আবাসনের মালিকেরই প্রথম নজরে আসে তাঁদের দেহ। একজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। অপরজনের রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে ছিল। তা দেখেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন থানায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। জোড়া দেহ (Deadbody) নিয়ে তীব্র আতঙ্ক এলাকায়।
মধ্যমগ্রাম থানার অন্তর্গত দোলতলা এলাকার পুষ্পক রেসিডেন্টি আবাসনের বি ব্লকের দোতলায় ভাড়া থাকতেন বিকাশ তিরকে ও মালা তিরকে। বিকাশের বয়স ২৯ বছর, মালা ছাব্বিশ বছরের। দুজনেই পরিচারকের কাজ করতেন বলে জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। দিন কয়েক আগে ফ্ল্যাটের মালিক তিরকে দম্পতির কাছে চাবি রেখে গিয়েছিলেন ওড়িশায় (Orissa) বেড়াতে। শনিবার তিনি ফিরে এসে চাবি চাইতে যান তাঁদের কাছে। সেখানে গিয়ে দেখতে পান নৃশংস দৃশ্য। পুলিশের অনুমান, বেশ কয়েকদিন আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। কারণ, শরীরে পচন ধরেছে তাঁদের। কীভাবে মৃত্যু হল তিরকে দম্পতির, তার তদন্তে নেমেছে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। তবে প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রীকে খুন (Kills)করে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী।
[আরও পড়ুন: ‘তিহার জেলে স্বাগত’, কেজরিওয়ালকে আগাম অভ্যর্থনা ‘ঠগবাজ’ সুকেশের]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুতল আবাসনের বাসিন্দা বনানী পাল সম্প্রতি পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়ি দেখভালের জন্য তিনি আবাসনের পরিচারক বিকাশ তিরকেকে চাবি দিয়ে যান। শনিবার বিকালে বনানীদেবী ফিরে দেখেন বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরেও সাড়া না মেলায় তিনি আবাসন কমিটি এবং মধ্যমগ্রাম থানায় জানান।
[আরও পড়ুন: হিমাচলে নতুন ‘খেলা’, বিজেপিতে যোগ কংগ্রেসের ৬ বহিষ্কৃত বিধায়কের, পদত্যাগ ৩ নির্দলেরও]
খবর পেয়েই পুলিশ এসে দরজা ভেঙে বিকাশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। পাশেই মেজেতে দেখা যায় পচাগলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী মালা তিরকের দেহ। আবাসনের এক বাসিন্দা শিল্পী পাল জানান, ”ঘর বন্ধ থাকায় খুব গন্ধ পাওয়া যায়নি। শুনলাম বিকাশ বনানীকে গত মঙ্গলবার ফোন করে জানিয়েছিল সে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে এসে বাড়ি পরিষ্কার করবেন। কিন্তু পরে যে এমন ঘটনা ঘটবে আমাদের ধারণা ছিল না।” মৃতের দিদি শুক্লা তিরকে জানান, ”কয়েকদিন ধরেই আমার ভাই ও তাঁর স্ত্রী নিখোঁজ ছিল। থানাতেও জানানো হয়েছিল।” এ বিষয়ে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিমাই ঘোষের বক্তব্য, “বিষয়টি জানার পরই আমি ও বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ সেখানে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।” পুলিশ জানিয়েছে, পরিচালক দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন পারিবারিক সমস্যা চলছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।