shono
Advertisement

সংগ্রামের স্বীকৃতি, জাতীয় পুরস্কার জিতলেন বঙ্গের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার

তাঁর মতো ব্যক্তিদের জন্য কী বার্তা পুরস্কারবিজয়ীর, শুনুন।
Posted: 02:45 PM Dec 14, 2021Updated: 03:53 PM Dec 14, 2021

গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: পথ দেখিয়েছিল ‘সংবাদ প্রতিদিন’ই। সেই পথে হেঁটে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে জাতীয় পুরস্কার জিতে নিলেন বসিরহাটের (Basirhat) ছেলে মহম্মদ আবু মুছা গাজি। শুধু বসিরহাট নয়, আজ তামাম ভারতের কাছে এ রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে। সারা দেশের ৪৮ জনের এ রাজ্যের হয়ে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় অধিকার মন্ত্রকের জাতীয় পুরস্কার (National Award) পেয়েছেন তিনি।

Advertisement

জাতীয় পুরস্কারবিজয়ী আবু মুছা মেডেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত

 

জন্মের পর থেকে শুরু জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতের লড়াই। শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও একদিকে কানে না শুনতে পাওয়া, অন্যদিকে, বলতে না পারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক যুবকের পড়াশোনা থেকে শুরু করে নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় শুধুই প্রতিবন্ধকতা। ১৮ বছর আগে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের  হাসনাবাদ (Hasnabad)  ব্লকের চকপাটলির বেনা গ্রামে সংবাদপত্র ঢুকতে সময় লেগে যেত বেলা ১১ টা। তাও বাড়িতে পৌঁছত না কাগজ। সাইকেল চালিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের ফেরিঘাটে গিয়ে সংবাদপত্র জোগাড় করে পড়া!

[আরও পডুন: রেলের ওয়ার্কশপে নির্মীয়মাণ কোচে বিধ্বংসী আগুন, প্রচুর লোকসানের আশঙ্কা]

২০০৩ সালে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বিশেষ কলাম প্রকাশিত হত। সেখানেই তাঁর মতো ব্যক্তিদের জন্য ভারত সরকারের বিশেষ সরকারি সুযোগ-সুবিধার খোঁজ পান আবু মুছা। সেসময় ৫০০ টাকা ঋণ নেন। তখনও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেননি মুছা। তবে সেই দিন থেকেই লড়াই শুরু হয় তাঁর। পড়াশোনার পাশাপাশি হাতের কাজ শুরু করেন। সেই থেকে আজ এই জায়গায়। প্রথমে দরজি (Tailor) কাজ শুরু করলেও আজ ফ্যাশন ডিজাইনে শুধু এই রাজ্য নয়, রাজ্যের বাইরেও নাম ছড়িয়ে পড়েছে আবু মুছা গাজির। আসে একাধিক খেতাবও। ২০০৯ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকারের সামাজিক ন্যায় অধিকার মন্ত্রকের কাছ থেকে পুরস্কার পান তিনি।

মুছা গাজির জাতীয় পুরস্কারের স্বর্ণপদক

বর্তমানে নিজের টেলারিং সেন্টারে অন্তত ৫০ জনের অন্ন সংস্থানের দায়িত্বও নিয়েছেন মুছা। পাশাপাশি, একাধিক সামাজিক কাজে যুক্ত করেন নিজেকে। কয়েক বছর ছিলেন দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জাতীয় মূক-বধির দলের ক্রিকেটার-সহ দীর্ঘ ৬ বছর বেঙ্গল ডেফ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অবশেষে জাতীয় পুরস্কারের খেতাবও আসে ঝুলিতে। সম্প্রতি গত ৩ ডিসেম্বর দেশের প্রায় ১১০০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৮ জনকে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় অধিকার মন্ত্রক থেকে গোল্ড মেডেল-সহ শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর মধ্যে বসিরহাট তথা রাজ্যের হয়ে পুরস্কার পান আবু মুছা গাজি।

[আরও পডুন: জলপাইগুড়িতে ফের ভাল্লুক আতঙ্ক, নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ চা বাগানের কাজ]

বসিরহাটের এই ফ্যাশন ডিজাইনার (Fashion Designer) চান, তাঁর মতো সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে। তাই তাঁদের জন্য স্কুল গড়তে চান তিনি। পাশাপাশি, যদি কেউ তাঁর মতো টেলারিংকে পেশা করতে চায়, তাহলে তাঁদের পাশেও দাঁড়াতে চান। দিতে চান ট্রেনিং। এছাড়াও যদি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তাঁর কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা চায়, তাহলেও তিনি সাহায্যের হাত এগিয়ে দেবেন। তাঁর এই স্বপ্ন পূরণে পাশে রয়েছেন, জানান মুছার বাবা মহম্মদ রাহুল আমিনও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার