সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সকাল এবং দুপুুুরের খাবার মিলতই। এবার রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের পুষ্টির দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে প্রশাসন৷ বদল হচ্ছে জলখাবারের মেনু। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তৈরি হচ্ছে ‘রেডি টু ইট’ খাবার, যা আরও বেশি পুষ্টিকর৷
[ আরও পড়ুন: ফেসবুকে উদয়ন গুহকে খুনের হুমকি, কাঠগড়ায় বিজেপি নেতা]
জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় চলতি মাস থেকেই এই ব্যবস্থা চালু করছে জেলা প্রশাসন। সরকারি বিধি অনুযায়ী, দুপুরের পাশাপাশি সকালেও পুষ্টিকর-সুষম খাবার দিতে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির ছোট পড়ুয়াদের৷ কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এটি দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সব কটি জেলা প্রশাসনকে৷ সেইমতো দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার৷ বনমহলের এই জেলায় দীর্ঘদিন ধরে বাজার থেকে ছাতু কিনে জলখাবারের চাহিদা মেটাচ্ছিলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। জেলা প্রশাসনের ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচিতে গিয়ে ‘মর্নিং স্ন্যাক্স’–র এই খাবার দেখে কার্যত চমকে ওঠেন জেলাশাসক। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সকালের খাবারের জন্য ‘রেডি টু ইট’ খাবার তৈরি করবেন স্বনির্ভর দলের মহিলারাই।
আপতত জেলার পাঁচটি ব্লকের সদর পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে এই কাজ কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে। তারপর ধাপে ধাপে আগস্ট মাসের মধ্যে জেলার ৪,৮৩৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই খুদে পড়ুয়াদের এই খাবার মিলবে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কথায়, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায়, সেই লক্ষ্যেই ‘রেডি টু ইট’ তৈরি করবে স্বনির্ভর দলের সদস্যরা৷ আপাতত পাঁচটি ব্লক দিয়ে আমরা এই কাজ শুরু করছি। ধাপে ধাপে সব ব্লকেই এটি চালু হবে।’’ পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বলরামপুর, পুরুলিয়া ১, পুরুলিয়া ২, মানবাজার ২ ও সাতুড়ি ব্লক থেকে এই কাজ শুরু হচ্ছে।
[ আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টা পর খোঁজ মিলল ব্রহ্মপুত্র মেল থেকে উধাও মহিলা যাত্রীর]
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাজার থেকে কেনা ছাতুতে তেমন শর্করা নেই। ফলে ছোটদের জন্য তা বিশেষ পুষ্টিকরও নয়৷ স্বনির্ভর দলের তরফে ‘রেডি টু ইট’–এ গম, ছোলা, বাদাম ভেজে তাতে চিনি মিশিয়ে প্যাকেটবন্দি করবে। সেই প্যাকেটবন্দি খাবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সেই প্যাকেটের খাবার জলে গুলে লাড্ডুর মতো তৈরি করে শিশুদের খাওয়াবে৷ যার নাম দেওয়া হচ্ছে, ‘পৌষ্টিক লাড্ডু’৷ ইতিমধ্যেই সেই লাড্ডু চেখেও দেখেছেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তারা। গত শনিবার ‘গো টু ভিলেজ’–এ বলরামপুরের ঘাটবেড়ায় গিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ‘বর্ষা মহিলা সংঘ’-এর হাতে তৈরি ওই খাবার খান তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, স্বনির্ভর দলগুলি এই কাজের জন্য মেশিনপত্র ও কাঁচামাল কিনে বিনিয়োগ করেছে। বলা যায়, ওই দলগুলির আয় বাড়াতে এই খাবার তৈরির কাজ তাদের দেওয়া হয়েছে৷ আসলে এই জেলায় স্বনির্ভর দলগুলি মিড–ডে মিলের রান্না নিয়ে উৎসাহী। অথচ আয়বৃ্দ্ধির যে আরও কত উপায় আছে, তা তাঁরা জানেনই না। মিড-ডে মিলের রান্নার কাজে আটকে থেকেই নিজেদের মধ্যেই কলহ করেন। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন তাই চাইছে, এই গোষ্ঠীগুলিকে নিত্যনতুন কাজে উৎসাহী করতে৷
ছবি: অমিত সিং দেও।
The post এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি পুষ্টিকর লাড্ডু খাবে অঙ্গনওয়াড়ির খুদেরা appeared first on Sangbad Pratidin.
