স্টাফ রিপোর্টার: শেষ জনগণনা অনুযায়ী বাংলায় রূপান্তরকামীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৪৯। স্বাক্ষরতার হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। ‘লিঙ্গ পরিচয়কে স্বীকৃতি দিয়ে সামগ্রিক সুস্থতার সহায়ক স্বাস্থ্যচর্চা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবনে তুলে ধরা হল এই তথ্য। প্রকাশিত তথ্য উঠে এসেছে দেশের অন্যান্য রাজ্যের ছবিও। দেখা গিয়েছে, রূপান্তরকামীদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হারে বাংলার তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে বিহার-গুজরাট।
বিহারে রূপান্তরকামীর সংখ্যা ৪০ হাজার ৮২৭। তাদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ৪৪.৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে শেষ জনগণনা অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশে রূপান্তরকামীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৬৫। স্বাক্ষরতার হার ৫৬.০৭ শতাংশ। সমাজের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল, সংবেদনশীল হওয়ার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্যভবনের এই কর্মসূচি। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইন্সটিটিউট অফ ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ারের ডিরেক্টর ডা. কৌস্তভ নায়েক, এসএসকেএম ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিক ডিরেক্টর ডা. অমিত কুমার ভট্টাচার্য্য, ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির মনোস্তাত্ত্বিক সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মায়াঙ্ক কুমার, স্বাস্থ্যভবনে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. দেবাশিস হালদার, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক ডা. ওমপ্রকাশ সিং
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উন্মোচিত তথ্যের তুলনায় বাস্তবে সব রাজ্যেই রূপান্তরকামীদের সংখ্যা কিছুটা হলেও বেশি। কারণ? চাইল্ড ইন নিড ইন্সটিটিউটের স্বাতী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জনগণনার সময় যখন বাড়িতে আধিকারিকরা আসেন তখন সামাজিক সংকোচের কারণে রূপান্তরিত মহিলা, পুরুষরা নিজের লিঙ্গ-পরিচয় প্রকাশ করতে লজ্জা পান। পাশাপাশি রয়েছে সামাজিক কটুক্তির ভয়ও। এই ভয় কাটাতে পুলিশ-সমাজ কল্যাণ দপ্তর-শিক্ষা দপ্তরকে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যভবনে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. দেবাশিস হালদার। তিনি বলেছেন, ‘‘বাংলায় এঁদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। হাসপাতালে যখন একজন রোগী আসবেন তখন নিশ্চিত করবেন তিনি পুরুষ-মহিলা অথবা তৃতীয় লিঙ্গের কেউ হলেও উন্নত মানের চিকিৎসা যেন পান। ছেলে-মেয়ে-ট্রান্সজেন্ডার যেই হোন সকলের জন্য সকলের জন্য ‘সমান স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যেই বাংলায় এই কর্মসূচি।
উল্লেখ্য, সমকামী কিম্বা রূপান্তরিত নারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলেও যেন তাঁর মর্যাদা বিন্দুমাত্র ক্ষুন্ন না হয়। তাঁর সঙ্গে আরও সংবেদনশীল হতে হবে, এই লক্ষ্যেই তিনদিন ব্যাপী কর্মশালা শেষ হল মঙ্গলবার।
