শেখর চন্দ্র, আসানসোল: বাড়ির দেওয়াল, কখনও মেঝে এমনকি সিলিংয়ে যখন তখন জমছে জল। নাবালিকা বাড়িতে যখন একা থাকে বা একা পড়াশোনা করে তখনই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। ওই শিশুর গায়ে কেউ জল ঢেলে দিচ্ছে। আবার কেউ ছিটিয়ে দিচ্ছে থুতু। প্রায় দেড়মাস ধরে এমনই অদ্ভুত কাণ্ডকারখানার সাক্ষী আসানসোলের নিয়ামতপুরের কুলটির (Kulti) বিষ্ণুবিহারের সেন বাড়ির সদস্যরা। ‘জলভূতে’র পাল্লায় পড়ে হোম, যজ্ঞ, ফকির কোনও কিছুই বাদ রাখেননি ওই পরিবারের লোকজন। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানমঞ্চের দারস্থও হন ওই পরিবারের সদস্যরা।
বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা বাড়িতে যাওয়ার পর ভুক্তভোগীরা জানান, বাড়ির যেখানে খুশি জল পড়ছে। কখনও মেঝেতে, কখনও দেওয়ালে আবার সিলিংয়েও৷ বাড়ির ওই শিশুকন্যাটি জল পড়া দেখতে পাচ্ছে। বা তার গায়ে জল পড়ছে। গৃহকর্ত্রী সুদীপ্তা সেন জানান, “প্রথমে মেয়ের কথা বিশ্বাস করিনি। পরে দেখা গেল আচমকা বাড়ির সমস্ত জায়গা ভিজে যাচ্ছে। পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকেও দেখাই।” প্রতিবেশীরাও ‘জলভূত’কে দেখতে ভিড় জমান। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে মোবাইলে ঘোষ্ট ডিটেকটর দিয়ে ভূত খুঁজতেও শুরু করে দেন।
[আরও পড়ুন: দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোটদানের আরজিতে তৃণমূল সাংসদদের চিঠি শুভেন্দুর, বয়ান নিয়ে আপত্তি সৌগতর]
স্থানীয় বাসিন্দা সত্যনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি ওই অ্যাপ দিয়ে ভূতের হদিশ পেয়েছি। যারা ঘোষ্ট ডিটেক্ট করেন তাঁরা আসলে আরও ভাল বুঝতে পারবেন।” ‘জলভূতে’র দাপটের সাক্ষী নাবালিকা মাঝেমধ্যে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। ভয় লাগছে না বলেও দাবি তার। তিন ঘণ্টা ওই বাড়িতে বিজ্ঞানকর্মীরা ছিলেন।তবে ‘জলভূতে’র উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
বিজ্ঞানমঞ্চের রাজ্য কমিটির সদস্য কিংশুক মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাতে তিন ঘণ্টা ওই বাড়িতে থাকলাম।কিন্তু কোথাও জল পড়েনি। নাবালিকা সকলের সামনে ছিল বলে ওর গায়ে জল পড়েনি দাবি তার পরিবারের। এই দাবির মাধ্যমে মিথ্যে বলার প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে।” বিজ্ঞান কর্মী প্রসূন রায় বলেন, “শিশুকে কাউন্সেলিং করানোর প্রয়োজন। এর মধ্যে কোনও অলৌকিক, অতিপ্রাকৃত কিছু নেই। ভূতের কোনও অস্তিত্ব নেই।” ভূত তাড়াতে সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রস্তাবও দেওয়া হয় পরিবারকে।