রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: লোকসভা ভোটের আগে সিপিএমের নেতারা বিজেপির (BJP) হয়ে মাঠে নামবে। শনিবার খেজুরির প্রকাশ্য সভায় রাম-বাম জোটের কথা কার্যত মেনে নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি এতদিন ধরে তৃণমূল অভিযোগ করত যে সিপিএমের হার্মাদরা লাল জামা ছেড়ে গেরুয়া জামা পরে বাংলায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এদিন সেই অভিযোগেও কার্যত সিলমোহর দিয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা।
এদিন খেজুরির কামারদাতে পুলিশের সন্ত্রাস, আত্যাচার ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সভার আয়োজন করে বিজেপির খেজুরি বিধানসভা কমিটি। এই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু। এই মঞ্চ থেকেই তিনি বলেন, “সিপিএমের অনেক বরিষ্ঠ নেতা বাড়িতে বসে আছেন। তাঁদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। খেজুরি দুটো ব্লকের সিপিএম নেতারা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি এই প্রবীণ নেতাদের লোকসভার আগে মাঠে নামাবো।” তাঁর আরও দাবি, “বারাতলা, নিজকসবা, কামারদা, কলাগেছিয়া, বীরবন্দর, লাক্ষী সব জায়গায় যারা সিপিএমটা করতেন,জোরদার জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বর্গাদার, পাট্টাদারদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা লোকসভার আগে মাঠে নামবে।” বিরোধী দলনেতার এই দাবিকে পাত্তা দিতে নারাজ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বলেন, “উনি আগে নিজের দল সামলাক। কোন বরিষ্ঠ নেতার সঙ্গে ওঁর (শুভেন্দু অধিকারী) কথা হয়েছে জানি না। হয়তো মোদিজির সঙ্গে কথা হয়েছে। তৃণমূল-বিজেপি একসঙ্গে বামেদের আক্রমণ করছে।”
[আরও পড়ুন: শৌচাগারে রাখা মিড ডে মিলের চাল! চুরির অভিযোগে স্কুলে ‘তালাবন্দি’ দুই শিক্ষক]
বক্তব্য দিতে গিয়ে ভুলবশত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম নেতাদের ব্যবহারের কথা বলে ফেলেন। যা আগেই অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। শুধু তাই নয় ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের হার্মাদদের খেজুরি ও নন্দীগ্রামে যে কাজে লাগানো হয়েছিল তা এদিনের বিরোধী দলনেতার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। লোকসভা নির্বাচনে খেজুরি,নন্দীগ্রামের মাটিকে অশান্ত করতে ফের সেই সিপিএমের প্রাক্তন হার্মাদদের কাজে লাগানোর বার্তাই এদিনের সভা থেকে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উওর দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আমি বলেছি সিপিএমের এক সময় যারা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন,সদস্য ছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। যারা ৭৭ সালের পরে জোরদার,জমিদারদের সঙ্গে লড়াই করে বর্গাদারদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করে ছিলেন তাঁদের কয়েকজন আমার কাছে এসেছিলেন। বাকিদের সঙ্গে কথা বলব। আসলে খেজুরিতে একাধিক পঞ্চায়েত বিজেপি জয়ী হয়েছে। খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতি ৯ জন কর্মাধ্যক্ষ হয়েছে। এরা সকলেই প্রথমবার জিতে পদে বসেছেন। তাই বর্ষীয়ান সিপিএম নেতারা কোনও পদে না থেকে ওদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরামর্শ দাতা হিসেবে কাজ করবেন। তাহলেই ওঁদের পরামর্শে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে উঠতে পারবে।”