shono
Advertisement

ভোরের ট্রেনে এসেছিলেন ব্রত ভাঙতে, ফিরলেন নিথর হয়ে! শোকে কাতর পানিহাটিতে মৃতদের পরিবার

পানিহাটির দণ্ড উৎসবে গিয়ে প্রবল গরমে মৃত্যু হয়েছে পূর্বস্থলীর তিন বাসিন্দার।
Posted: 08:00 PM Jun 12, 2022Updated: 09:45 PM Jun 12, 2022

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ৫০৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। তার মাহাত্ম্য বিশাল। তাতে শামিল হতে পারা তো পুণ্যের কাজ। তাই ভোরের ট্রেন ধরে সেই বর্ধমানের পূর্বস্থলী (Purbasthali) থেকে উত্তর ২৪ পরগার পানিহাটিতে (Panihati) ছুটে এসেছিলেন বছর সত্তরে ছায়ারানি দাস। আর বাড়ি ফিরল তাঁর নিথর দেহ! কিছুতেই যেন বিশ্বাস হচ্ছে না পরিবারের কারও। রবিবার সকালে পানিহাটির দণ্ড উৎসবে যোগ দিয়ে প্রচণ্ড গরমে মৃত্যু হয় তিনজনের। তার মধ্যে একজন ছায়ারানি দাস। আর বাকি দু’জন তাঁরই প্রতিবেশী দম্পতি সুভাষ পাল ও শুক্লা পাল। এমন মর্মান্তিক খবরে আকাশ ভেঙে পড়েছে সকলের।

Advertisement

পানিহাটির মেলায় মৃত ছায়ারানি দাস।

সুভাষ পাল, শুক্লা পাল, ছায়ারানি দাস। পানিহাটিতে নিহত তিনজনেরই বাড়ি পূর্বস্থলীর যজ্ঞেশ্বরপুর এলাকায়। রবিবার সকালে এই দুর্ঘটনার পর বিকেলে যজ্ঞেশ্বরপুর এলাকায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হাজির হন পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমিক বাগচি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে চাইছিলেন খুঁটিনাটি। সেখানেই জানা গেল, সুভাষ পাল ও শুক্লা পালের বাড়ি যজ্ঞেশ্বরপুরে হলেও তাঁরা থাকতেন পানিহাটির গৌরাঙ্গ অ্যাপার্টমেন্টে, মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পাড়ায়। আর তাঁদের আবাসনের নিচেই এদিন চলছিল দই-চিঁড়ে উৎসব। সকালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আরতি দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানেই ঘটে যায় প্রাণঘাতী ঘটনা।

[আরও পড়ুন: পানিহাটি মেলায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানি, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা রাজ্য প্রশাসনের]

সুভাষ পালের বয়স ৭০ বছর। পূর্বস্থলীর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। অবসরের পরে পানিহাটিতে ফ্ল্যাট কিনে সেখানেই বসবাস শুরু করেন। সুভাষবাবুর ভাই ললিত পাল জানান, ”পূর্বস্থলীর বাড়িতে মেয়ে আর জামাইকে নিয়ে জামাইষষ্ঠী পালন করেছিলেন তাঁরা। এরপর ওইদিনই জামাইয়ের গাড়ি করে পানিহাটি ফিরে যান। দাদার শ্বাসকষ্ট ছিল। মেলায় ভিড়ে গরম আর শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে।” পাল দম্পতির জামাই দেবাশিস বণিক জানাচ্ছেন, শ্বশুর-শাশুড়ির ফ্ল্যাটের নিচেই মেলা হচ্ছিল। ওঁরা সেখানে গিয়েছিলেন। তারপর এমন একটা ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারছেন না কেউ।

পানিহাটির মেলায় নিহত দম্পতি সুভাষ পাল ও শুক্লা পাল।

অন্যদিকে, ছায়াদেবীর নাতনি পিংকি দেবনাথ জানাচ্ছেন, আজ ভোর চারটের ট্রেন ধরে পানিহাটির দণ্ড মহোৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন দিদা। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ওই মেলায় প্রবীণদের জন্য কেন আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন?  এমনই প্রশ্ন তুলেছেন ছায়াদেবীর নাতনি। রবিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পূর্বস্থলীর দু’নম্বর ব্লকের বিডিও (BDO) সৌমিক বাগচি ঘোষণা করেছেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে মৃতদের পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকা করে সাহায্য তুলে দেওয়া হয়েছে । তবে হারিয়ে যাওয়া মানুষজনের জন্য শোক কি আর তাতে কাটবে?  বলছেন স্বজনহারাদের কাছের মানুষরা।

[আরও পড়ুন: কম্পিউটার ক্লাসের নামে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন! গ্রেপ্তার শিক্ষক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার