সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপে একসঙ্গে তিনজন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক বাড়ল এলাকায়। আক্রান্তদের পরিবার পরিজন ও সংস্পর্শে আসা মোট ১১০ জনকে ইতিমধ্যেই সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে তাঁদের লালারসের নমুনা। কাকদ্বীপ হাসপাতালে ভরতি থাকাকালীন আক্রান্তদের যাঁরা চিকিৎসা ও শুশ্রূষা করেছিলেন যাঁরা, সেই সমস্ত চিকিৎসক ও নার্সদেরও সোয়াব টেস্ট হবে।
কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার গোবিন্দপুর-মাধবনগর, কাকদ্বীপ থানার বামানগরের রথতলা এবং ওই থানারই বৈকুন্ঠপুরের ৫ নম্বর ঘেরির হালিশহরের তিন বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে রয়েছেন ৭২ ও ৪৮ বছরের দুই মহিলা এবং ৭০ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, এঁরা তিনজন গত ১৪, ১৫ এবং ১৬ এপ্রিল, পরপর তিনদিন জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মত কিছু উপসর্গ নিয়ে কাকদ্বীপ হাসপাতালে ভরতি হন। তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে ২১ এপ্রিল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সোয়াব টেস্টে তিনজনই করোনা আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হন। শনিবার কাকদ্বীপ হাসপাতালে সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। তৎপরতা শুরু হয়ে যায় কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনেরও। তিন আক্রান্তকেই চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের COVID হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইন্সটিটিউটে ভরতি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সংক্রমণ রুখতে সচেতনতার বার্তা, বাড়িতে বসে মাস্ক বানাচ্ছেন কলেজ পড়ুয়ারা]
ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় জানিয়েছেন, ওই তিনজনের পরিবারের সদস্য ও সংস্পর্শে আসা মোট ১১০ জনকে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কাকদ্বীপ হাসপাতালে যে সকল চিকিৎসক ও নার্স ওই তিন আক্রান্তের শুশ্রূষা করেছিলেন তাঁদের সকলের সোয়াব টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে যেহেতু ওই তিনজনকে কাকদ্বীপ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা চলছিল, সেকারণে আগেভাগেই ওই চিকিৎসক ও নার্সরা উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন।
এদিকে কাকদ্বীপে যে তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে তাঁদের কোনও বহিরাগত যোগ ছিল না বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিককালে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে কোথাও যাওয়ারও কোনও ইতিহাস তাঁদের নেই। তা সত্ত্বেও তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসন। তবে লকডাউনের কারণে ভিনরাজ্য ফেরত কোনও পরিযায়ী শ্রমিকের সংস্পর্শে কোনওভাবে তাঁরা এসেছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এদিকে সংক্রমণ এড়াতে কাকদ্বীপ হাসপাতাল চত্বরজুড়ে এদিন জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। আরও কড়াকড়ি করা হয় লকডাউনের নিয়মকানুনে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বেরতে নিষেধ করে মাইকিংও করা হয় এদিন।
[আরও পড়ুন: শিলিগুড়ির বাজারগুলিতে সচেতনতার অভাব, অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা]
The post কাকদ্বীপে করোনা আক্রান্ত ৩, সংস্পর্শে আসায় কোয়ারেন্টাইনে শতাধিক বাসিন্দা appeared first on Sangbad Pratidin.
