শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: প্রতিবার ভেসে ওঠে নাম। আর প্রতিবারই আশাহত হতে হয়। এবার তাই আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের তৃণমূল (TMC) প্রার্থী ডঃ নির্মলচন্দ্র রায়। দল এবারের উপনির্বাচনে তাঁকেই প্রার্থী করেছে, জানতে পেরে অবাক তিনি! ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ শোনালেন বিস্ময়ের কথাই। বললেন, ”দল আমাকে এত বড় একটা দায়িত্ব দিয়েছে, এটা পুরস্কার। আমার প্রত্যাশার বাইরে।” ধূপগুড়ির বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুতে উপনির্বাচন হচ্ছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ। বাম জোটের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
বস্তুত ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে (Dhupguri by-election) প্রার্থী নির্বাচনে চমক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত শুক্রবার ভাওয়াইয়া শিল্পী তথা শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল সিপিএম (CPM)। তাঁকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে কংগ্রেস, আইএসএফ। স্বাভাবিকভাবেই এই আসনে শাসকদল কাকে প্রার্থী করবে, তা নিয়ে শুরু হয়ছিল জল্পনা। রবিবার এই নিয়ে বৈঠকে বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। রাতে অধ্যাপক ড: নির্মলচন্দ্র রায়ের নাম ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: মোদির ডাকে সাড়া! জম্মু-কাশ্মীরের বাড়িতে তেরঙ্গা ওড়ালেন হিজবুল জঙ্গির ভাই]
ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের অধ্যাপক নির্মলবাবু শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজবংশী (Rajbangshi) কৃষ্টি-সংস্কৃতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। ধূপগুড়ির মাগুরমারির বাসিন্দা তিনি। কংগ্রেসি পরিবারের সদস্য। একাধিক বই লেখার পাশাপাশি একটি পত্রিকার ও সম্পাদনা করেন নির্মলবাবু। বর্তমানে ধূপগুড়ি গার্লস কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক জীবন বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। গত ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবেও নাম উঠে আসে।
[আরও পড়ুন: খুনের মামলায় অপরাধীদের সন্ধানে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, বেধড়ক মার ক্ষুব্ধ জনতার]
এবারও তিনি আলোচনায় ছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত তাঁকেই প্রার্থী করা হল জেনে বিস্মিত অধ্যাপক। আবেগপ্রবণ গলায় বলছেন, “আমার নাম প্রতিবারই এভাবে ভাসে, কিন্তু শেষপর্যন্ত আর হয় না। আমি এতদিন ধরে দল করছি, কিন্তু প্রার্থী হইনি। এবার দল আমাকে এত বড় দায়িত্ব দিল, এটা তো পুরস্কার। আমি ভাবতেই পারিনি। জয় নিয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। ধূপগুড়ির মানুষ আমাকে ভালবাসেন। তাঁরা সঙ্গে থাকবেন।” কিন্তু উত্তরবঙ্গে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। কীভাবে লড়াই করবেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সবাইকে নিয়েই ৫ সেপ্টেম্বরের ভোটে লড়বেন। আর জিতে ধূপগুড়ি আসনটি দলকে উপহার দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
