সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: স্বাধীনতা দিবসে সৌজন্যের রাজনীতি! দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তি উৎসবে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan) জেলা। ঠিক এই দিনেই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এক হয়ে গেল সিপিএম এবং তৃণমূল। হাতে হাত মিলিয়ে দুই দলের নেতারা সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন।
পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের কিষান ভবনে জাতীয় পতাকা (National Flag) উত্তোলন করেন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। সারাদিনের নির্দিষ্ট কর্মসূচি সারতে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই সিপিএম কর্মী সমর্থকরা বিধায়কের গাড়ি দাঁড় করান। বিধায়ককে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে বলেন কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে।
[আরও পড়ুন: পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বিপত্তি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ার]
দুর্নীতি ইস্যুতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত শাসকদলকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে। তৃণমূলের (TMC) নেতা-মন্ত্রীর গ্রেপ্তারিকে সামনে রেখে মমতা সরকারকে বিঁধতে ছাড়ছেন না সিপিএম নেতারা। এমতাবস্থায় এই ‘সৌজন্যে’র রাজনীতি নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্তমূলক। যা এদিন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় শিল্পাঞ্চলে।
সিপিএমের পার্টি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “আজকের স্বাধীনতা দিবসে কোনও ব্যাপারে রাজনৈতিক রং দেখা উচিত নয়। আমি যেহেতু এই অঞ্চলের বিধায়ক, তাই তাঁরা অনুরোধ করেন এবং সেই মতো আমি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি।” এরপরই বিধায়কের গলায় রাজনীতির সুর। বলেন, ” তৎকালীন জ্যোতি বসুর সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাইটার্স বিল্ডিং থেকে চুলের মুঠি ধরে বার করে দিয়েছিল। কিন্তু ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করলে বদলার বদলে সিপিএম নেতৃত্বকে ফিসফ্রাই খাইয়েছিল।”
এদিকে নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ও সিপিএম নেতা কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাননীয় বিধায়ক আমাদের ঘরের মানুষ। তাই পতাকা উত্তোলনকে রাজনৈতিক রং দেওয়া উচিত নয়। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও স্বাধীনতা দিবসে আমরা সকলে একত্রিত।”