ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রবল দাবদাহ এবং ফণীর আতঙ্কের জেরে স্কুলে টানা দু’মাস ছুটি ঘোষণা করেছে শিক্ষা দপ্তর। তার ফলে মিড ডে মিলের জন্য মজুত করা চাল নিয়ে চিন্তায় পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ। একটানা দু’মাস পড়ে থেকে মজুত চাল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২ মে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তির পরপর আরও একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষক,শিক্ষিকাদেরও ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।টানা দু’মাস স্কুলে ছুটি থাকার বিষয়টি নিয়ে যদিও মিশ্র প্রতিক্রিয়া শিক্ষকমহলে। এতদিনে টানা ছুটিতে সিলেবাস ঠিকমতো পড়াতে অসুবিধার কথা জানিয়ে অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অভিভাবক মহল – সর্বত্র দু’মাস টানা স্কুল ছুটি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনাও শুরু হয়েছে। এরই মাঝে দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা৷
[আরও পড়ুন: পুরীর নিয়ম মেনে অক্ষয় তৃতীয়ায় রাজ্যে জগন্নাথের চন্দনযাত্রা]
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, টানা দু’মাস ছুটিতে মিড ডে মিলের জন্য সংগ্রহে রাখা চাল নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে বিডিও অফিস থেকে রিকুইজিশন পাঠানোর পর নির্দিষ্ট কোনও এজেন্সির মাধ্যমে মিড ডে মিলের চাল পৌঁছে দেওয়া হয়। একেবারে সাধারণত এক বা দেড়মাসের জন্য স্কুলে একসঙ্গে দেওয়া হয়ে থাকে। স্টক শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে স্কুলের তরফ থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়। তারপর ফের চাল পৌঁছে যায় স্কুলে স্কুলে। শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, অনেক স্কুলেই মিড ডে মিলের দু-তিন সপ্তাহ বা একমাসের চাল মজুত রয়েছে।
বিভিন্ন চালকলের কাছ থেকে সরকারিভাবে যে লেভি আদায় করা হয়ে থাকে, সেই চালকল থেকে প্রথম খাদ্য দপ্তরের গুদামঘরে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির কাছে এবং তাদের মাধ্যমে চাল পৌঁছয় স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে৷ এই গোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণ হতে গেলে দেখা যায়, মিল থেকে চাল তৈরি হয়ে স্কুলে পৌঁছতে প্রায় ৬ মাস সময় লাগে৷ তাতে অনেকসময় চালে পোকাও ধরে যায়৷ আর শিক্ষকদের আশঙ্কা, এই পুরনো চাল ভাতে বাড়া দূরঅস্ত, আরও দু’মাস পড়ে থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাবে৷
[আরও পড়ুন: মমতা নয়, পুরুলিয়ার সভায় রাহুলের আক্রমণের নিশানায় মোদিই]
মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমাশাসকের কাছে শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, টানা দু’মাসের ছুটির নির্দেশ বাতিল করা হোক। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, যখন বেসরকারি স্কুলগুলিতে পুরোদমে পঠনপাঠন চালু থাকবে, তখন সরকারি স্কুলে টানা ছুটিতে পড়ুয়াদের প্রচুর ক্ষতি হবে৷ অভিভাবকদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। মহকুমাশাসক সৌমেন পাল জানিয়েছেন, শিক্ষকদের দাবিপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে দাবি পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি তিনি৷
ছবি: জয়ন্ত দাস।
The post স্কুলে টানা ছুটি, মিড ডে মিলের চাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা শিক্ষকদের appeared first on Sangbad Pratidin.
