shono
Advertisement

কারও ২৫, কারও ৫০ হাজার! ‘ভূতুড়ে’বিল না মেটানোয় অন্ধকারে গোটা গ্রাম, বিপাকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা

আলো না থাকায় কাজও করতে পারছেন না বাসিন্দারা।
Posted: 10:03 AM Feb 10, 2023Updated: 10:03 AM Feb 10, 2023

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: সামনে মাধ্যমিক (Madhyamik Exam 2023) পরীক্ষা। তার আগে কাটা গিয়েছে বাড়ির বিদ্যুতের লাইন। হত দরিদ্র পরিবারগুলো দিন কাটাচ্ছে অন্ধকারে। পঁচিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল এসেছে বলে অভিযোগ। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারের পক্ষে এত টাকার বিল এক সঙ্গে মেটানো কোনওভাবে সম্ভব নয়। 

Advertisement

ঘটনাস্থল বেলপাহাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত বামুনডিহা গ্রামের ডোমপাড়া। ডোম সম্প্রদায় ভুক্ত দরিদ্র মানুষের বাস সেখানে। সন্ধে নামলেই অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে গোটা গ্রাম। ঘরে ঢুকে পড়ছে চিতি সাপ। বৃদ্ধ, বৃদ্ধা সন্তানদের নিয়ে বিপদের মধ্যে বাস করছেন সকলে। লেখাপড়া করতে পারছে না পড়ুয়ারা। কারণ, চড়া দামে বাজার থেকে কেরোসিন তেল কেনারও সামর্থও নেই তাদের। বাসিন্দারা মূলত বাঁশ থেকে ঝুড়ি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে তা বিক্রি করে সংসার চালান। বাসিন্দাদের অভিযোগ একশো দিনের কাজ করেও তারা টাকা পাননি। বাঁশের কাজ করার পাশাপাশি দূর্গা পুজো-সহ বিভিন্ন পার্বণে ঢাক বাজান। তবে লাউড স্পিকার, মাইকের দাপটে এখন দূর্গা পুজো বাদে অন্যান্য সময়ে তেমন ঢাক বাজানোর বায়না পান না। ফলে বর্তমানে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক।

[আরও পড়ুন: নওশাদের গ্রেপ্তারি নিয়ে অশান্তির মাঝেই ফুরফুরা শরিফকে উপহার মমতার, দিলেন ১০০ বেডের হাসপাতাল]

ডোমপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে তারা বাধ্য হচ্ছেন ঢাক বন্ধক দিতে। এদিকে বাঁশের দাম ১০০ থেকে দেড়শো টাকা। একটা বাঁশ থেকে চার থেকে পাঁচটা ঝুড়ি হয়। তা ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা দরে বিক্রি করেন। ঝুড়ি বিক্রি করে দেড়শো থেকে দুশো টাকা হাতে থাকে। কিন্তু সেই বাঁশও তাঁরা কিনতে পারছেন না। এক প্রকার বাধ্য থেকে জঙ্গল থেকে এক ধরনের লতা এনে তা থেকে ঝুড়ি বানাচ্ছেন। মূলত সারা দিন ধরে এই সব মানুষেরা জঙ্গল থেকে লতা সংগ্রহ করেন এবং সন্ধের পর তা দিয়ে ঝুড়ি বানান। কিন্তু তাদের অভিযোগ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে তারা সেই কাজও করতে পারছেন না। অলোকা মিদ্যা, গঙ্গাধর মিদ্যারা বলেন, “আমাদের এই ডোম পাড়ায় তিন চারটি ঘর বাদে সব ঘরের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। পঁচিশ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল এসেছে। আমরা কীভাবে এত টাকা দেব? ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করতে পরছে না। কাজও করতে পারছি না। বাড়ি বিষধর চিতি সাপ ঢুকে পড়ছে। বিপদের মধ্যে আমরা রয়েছি। আমাদের একটাই আরজি. বিদ্যুতের বিল অল্প অল্প করে দেব। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হোক।”

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সনকা মিদ্যা বলেন, “সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এদিকে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। লেখাপড়া করতে পারছি না। সন্ধের পর অন্ধকার হয়ে যায়। বাড়ির অবস্থা খুব খারপ। পরীক্ষার আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলে আমরা খুব উপকৃত হতাম।” এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের জেলা শাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন ” আমি বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের সাথে কথা বলব।”

[আরও পড়ুন: জামিন মিলল না নওশাদ সিদ্দিকীর, আরও ১৪ দিন কাটবে পুলিশ হেফাজতেই]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement