রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: একমঞ্চে পাশাপাশি রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি (BJP) নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়ক! রবিবার শংকরপুরের এক অনুষ্ঠানে একে অপরকে আলিঙ্গনও করলেন তাঁরা। আর এই ছবিতে যথেষ্ট তোলপাড় জেলার রাজনীতিতে। তবে এনিয়ে তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব দায় নেয়নি। বিজেপিও মুখ খুলতে নারাজ। একুশের নির্বাচনে (Assembly Election 2021) এই অখিল গিরির বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন স্বদেশ নায়ক। তবে সেই হারের জ্বালা ভুলে অনুষ্ঠানমঞ্চে অখিল গিরির পাশে বসতে দ্বিধা করলেন না তিনি। এ কি নেহাৎই সৌজন্য? নাকি অন্য কোনও সমীকরণ? জোর চর্চা জেলার রাজনৈতিক মহলে।
রবিবার শংকরপুর ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আয়োজিত গঙ্গাপুজোর উদ্বোধন করেন কারা মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri)। এই সংগঠনেরই সম্পাদক বিজেপি নেতা স্বদেশ নায়ক। ২০২১ সালে রামনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের অখিল গিরির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। সেই বিজেপির নেতার সঙ্গে একমঞ্চে মন্ত্রীকে দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুধুই কি সৌজন্য? এর আগে এই জেলারই তৃণমূল নেতা সুবল মান্না কাঁথির সাংসদ, বিজেপিতে যোগদানকারী শিশির অধিকারীকে (Sisir Adhikari) মঞ্চে উঠে প্রণাম করেছিলেন। শীর্ষ নেতৃত্ব মোটেই তা ভালো চোখে দেখেনি। এহেন কাজের জন্য শোকজ করা হয়েছিল সুবল মান্নাকে।
[আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে বন্ধু ইরানের মদতপুষ্ট হাউথিদের তাণ্ডব, ভারতে তেলের দামবৃদ্ধির আশঙ্কা]
এর পর রবিবারের ছবি ফের জল্পনা উসকে দিল। ‘শঙ্করপুর ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ আয়োজনে শংকরপুরে গঙ্গা পুজোর উদ্বোধনে আমন্ত্রিত ছিলেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁকে নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর রূপ নিয়ে কটাক্ষ করে ব্যাপক রোষের মুখে পড়েন অখিল গিরি। পরে অবশ্য ক্ষমাও চেয়ে নেন।
[আরও পড়ুন: হেরে ক্ষুব্ধ ‘চিনপন্থী’ মুইজ্জু, ভারতীয় সেনা হঠানোর ডেডলাইন দিল মালদ্বীপ]
রবিবার ওই অনুষ্ঠানে তাঁর পাশেই ছিলেন সংগঠনের সম্পাদক স্বদেশ নায়ক। শুধু পাশাপাশি বসাই নয়, একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন। আর তার পরই জল্পনা উসকেছে। শুধুই কি সৌজন্য নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও সমীকরণ কাজ করছে? যদিও এনিয়ে অখিল গিরি কোনও মন্তব্য করেননি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষ পন্ডা বলেন, ”কে কোথায় কোন মঞ্চে যাচ্ছে, তা আমার জানা নেই।” আর স্বদেশ নায়ক বলছেন, শংকরপুরের উন্নয়নের জন্য যা যা করতে হবে, তিনি করবেন। অর্থাৎ পরবর্তীতে প্রয়োজনে মন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থও হতে পারেন।