সুমন করাতি, হুগলি: পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি এবং সিবিআই উভয়েই তদন্ত চালাচ্ছে। ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলবন্দি হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীল। এই মামলায় তাঁরই ঘনিষ্ঠ সৌমিক চৌধুরীকে মূল সাক্ষী হিসেবে হাজির করার কথা ছিল ইডির। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় আচমকাই ছেদ পড়ল। শুক্রবার রাতের দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সৌমিকের। বছর পঞ্চাশের সৌমিকের মৃত্যুর নেপথ্যে অস্বাভাবিক কিছু এখনও পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই ফের চর্চা শুরু হয়েছে পুরনিয়োগ মামলার তদন্ত নিয়ে।
কিন্তু কেন পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন সৌমিক? অয়ন শীলকে নিয়ে ঠিক কী কী তথ্য ছিল তাঁর কাছে? তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, অয়ন এবং সৌমিক উভয়েই বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। দুজনে একসঙ্গে ব্যবসা চালাতেন। অয়ন দেখভাল করতেন ‘এবিএস ইনফোজোন’ নামে একটি সংস্থা। শমীক চালাতেন ‘এবিএস ইনফ্রাজোন’ নামে একটি সংস্থা। আদতে হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা সৌমিক কলকাতায় থাকতেন। তবে হুগলিতে থাকাকালীনই অয়নের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলআইসির এজেন্ট ছিলেন সৌমিক। পরে অয়নের সঙ্গে আলাপ ও ঘনিষ্ঠতার পর ব্যবসা শুরু করেন। শ্রীবৃদ্ধিও হয়।
পুরনিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তে বার বার উঠে এসেছে সৌমিকের প্রসঙ্গ। চলতি বছরের জুলাই মাসে সিবিআইয়ের জমা দেওয়া চার্জশিটেও অয়ন শীল ঘনিষ্ঠ হিসেবে রয়েছে তাঁর নাম। সিবিআইয়ের দাবি, অয়নের বন্ধু এবং এজেন্ট ছিলেন সৌমিক। তিনি ১০-১২ জনকে বিভিন্ন পুরসভায় চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি আরও একজন এজেন্টের কথাও সিবিআইয়ের ওই চার্জশিটে উল্লেখ ছিল।
হুগলির চুঁচুড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মহেশতলায় সৌমিকের বাড়ি। তবে দীর্ঘদিন সেটি বন্ধ অবস্থায় পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দুই থেকে আড়াই বছর সৌমিক হরফে বাপ্পাকে কেউ ওই অঞ্চলে দেখেননি। এখন একজন দেখভাল করতে মাঝেমধ্যে এলেও সম্পূর্ণ তালা বন্ধ অবস্থায় বাড়িটি পড়ে রয়েছে। সৌমিকের মৃত্যুতে পুর-নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।