অর্ণব দাস, বারাকপুর: সাতসকালে প্রতিবেশীর বাড়িতে বিকট শব্দ! প্রথমে স্থানীয়রা অনুমান করেছিলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। সকলে ছুটে সেই বাড়ির ভিতরে ঢোকেন। রান্নাঘর থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সত্তরোর্ধ্ব অনিতা ঘোষকে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলে প্রশান্ত ঘোষও জখম হয়েছেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে দমকল বাহিনী পৌঁছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও চিহ্ন মিলল না। ফলে বৃহস্পতিবার দিনভর চাঞ্চল্য ছড়াল বারাকপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জয়হিন্দ পল্লি এলাকায়। কেউ কেউ বলছেন, এ তো ভূতুড়ে কাণ্ড!
বাড়ির ভিতরে আচমকা বিস্ফোরণ। নিজস্ব ছবি।
উত্তর বারাকপুর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার বুদ্ধদেব দাস ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পর প্রাথমিক ভাবে জানান, "গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে দুজন জখম হওয়ার খবর পেয়ে এসেছিলাম। কিন্তু গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হওয়ার মত কিছু দেখলাম না। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।" এরপরই এলাকাবাসীর মুখে মুখে বিকট শব্দে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাটি 'ভৌতিক' বলে চাউড় হতে শুরু করে। ফলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ানোর পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, "বৃদ্ধা রান্নাঘরে চা করতে গিয়েছিলেন শুনলাম। তখনই ঘটনাটি ঘটেছে। বিকট শব্দ শুনে সকলে ভেবেছিল গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ। কিন্তু আদতে কী হয়েছে, কেউ বুঝতে পারছেন না।" খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস। তিনি বলেন, "গ্যাসের সিলিন্ডার ব্লাস্ট হওয়ার কথা প্রথমে জানাজানি হলেও তেমনটা হয়নি। আগুন লেগেছিল বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু ঘরে আগুনে পোড়া বিশেষ কিছু নেই। তবে প্রতিটি ঘরের জালনা দরজার কাঁচ ভেঙে ভীষণভাবে ক্ষতি হয়েছে। স্টিলের থালা-বাটি দুমড়ে গিয়েছে। ফ্রিজেরও ক্ষতি হয়েছে। কি করে কি হল সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ খতিয়ে দেখছে।"
শেষে প্রাথমিক তদন্তে টিটাগড় থানার পুলিশ জানতে পারেন, গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সমস্যার কারণে গ্যাস বেরতে বাধা পেয়ে প্রেশারে বেরিয়ে বিকট শব্দে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রেগুলেটরেই আগুন লেগেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম বৃদ্ধা মা ছেলেকে প্রথমে বারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃদ্ধার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।