মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: এসআইআর-এর খসড়া তালিকা (Bengal SIR Draft Voter List) বেরতেই সামনে আসছে একের পর এক ভুল। বিভিন্ন জায়গায় জীবিত ভোটারদের ঠাঁই হয়েছে মৃতের তালিকায়। এবার তেমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে জগৎবল্লভপুরে।
জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল জগৎবল্লভপুরের মাজু গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মাজুর বাসিন্দা বিদ্যুৎ দে-র। ২০২৫ সালের তালিকাতেও তাঁর নাম রয়েছে। এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন সকলের মতই তিনিও এসআইআরের ফর্মে নিজে সই করে জমা দিয়েছেন। কিন্তু খসড়া তালিকা হাতে পেয়েই চোখ কপালে উঠেছে তাঁর। জীবিত বিদ্যুতের ঠাঁই হয়েছে মৃতের তালিকায়।
ঘটনার কথা জানতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তালিকা বেরোতেই তিনি ছুটছেন বিএলও-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তাদের দরজায়। আবার নতুন করে ফর্ম ফিলাপ করছেন তালিকায় নাম তোলার জন্য। কিন্তু, তাঁর আশঙ্কা এত পরিশ্রম আবার পন্ড হয়ে যাবে না তো? জগৎবল্লভপুরের বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই অপরিকল্পিত দিশাহীন এসআইআরের বিরোধিতা করেছেন। আমিও একই কথা বলছি।" তিনি আরও বলেন, "জ্ঞানেশ কুমার এবং শুভেন্দু অধিকারী দু'জনে শুধু রোহিঙ্গা খুঁজছে আর দেশের জীবিত ভোটারদের কাউকে মৃত, কাউকে নিখোঁজ করে দিচ্ছে। অপরিকল্পিত দিশাহীন কাজের ফল এমনই হয়। এর সম্পূর্ণ দায় নির্বাচন কমিশনের।"
জগৎবল্লভপুর বিধানসভার মাজু গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মাজুর দে পাড়ায় বাড়ি বিদ্যুৎ বাবুর। ৪৪ বছরের বিদ্যুৎ দে হাওড়া শহরের এক দোকানের কর্মচারী। এসআইআরের খসড়া তালিকায় তাঁর স্ত্রী রূপশ্রী দেরও নাম রয়েছে। পরিবারের অন্যদের নাম রয়েছে। নাম নেই শুধু পরিবারের কর্তারই। তিনি জগৎবল্লভপুর বিধানসভার ২৯১ নম্বর পার্টের ভোটার। দীর্ঘ দু'দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ভোট দিয়ে আসছেন। এসআইআরের ফর্মে নিজে হাতেই সই করেছেন। কিন্তু তারপরেও খসড়া তলিকায় তাকে মৃত দেখানো হবে এটা মেনে নিতে পারছেন না বিদ্যুৎ বাবু।
বিদ্যুৎ দে বলেন, "আমি নিজে বিএলওকে ফর্ম জমা দিয়েছি। বিএলএরাও ছিলেন। তারাও আমাকে দেখেছেন। তারপরেও এত বড় ভুল কেন? আমাকে ফের নতুন করে তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য আবেদন করতে হচ্ছে। পরে যদি অন্য কোনও সমস্যা হয় তখন কে দেখবে?" এই বিষয়ে বিএলও অনিমা মন্ডল বলেন, "কোনও ভুল হয়তো হয়ে গেছে প্রশাসনিক স্তরে। তবে অসুবিধা নেই। ওনার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ফাইনাল লিস্টে আশা করি ওনার নাম থাকবে।"
