দেব গোস্বামী, বোলপুর: অনুব্রত মণ্ডলের জেলমুক্তির পরই বাড়ল কাজল শেখের নিরাপত্তা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নানুরের পাপড়ি গ্রামের বাড়িতে সশস্ত্র দুই দেহরক্ষীকে দেখেন। তবে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করল কারা, তা তাঁর অজানা বলেই দাবি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাধিপতি কাজল শেখের(Kajal Sheikh)। একইভাবে এই নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে রাজ্য থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি বলেই স্পষ্ট জানান জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। তবে শুক্রবার কাজল শেখের সঙ্গে দুজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী বেড়েছে। কী কারণে হঠাৎ তাঁর নিরাপত্তা বেড়েছে, তা স্পষ্ট নয়। কেন নিরাপত্তা বাড়ানো হল তা নিয়েই জল্পনা বেড়েছে জেলার রাজনৈতিক অন্দরে।
পুজোর আগেই দীর্ঘ দুবছর পর তিহাড় জেল থেকে ফিরেছেন অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। দিল্লি থেকে ফেরার পথেই ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়ে বোলপুরে নিচুপট্টির বাড়ি ফেরানো হয়। একই সঙ্গে কাজল শেখেরও একই ক্যাটাগরিতে নিরাপত্তা থাকবে নাকি সাধারণ নিরাপত্তা থাকবে তাঁর, তা নিয়ে জেলাজুড়েই জল্পনা চলছিল। কারণ, কাজল শেখ যখন যুবকর্মী ছিলেন বাংলাদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে পুলিশের জালে দুজন ধরা পড়ে। বাংলাদেশের দুজনকে নাকি কাজল শেখকে খুন করার জন্যও পাঠানো হয়। এবং দুষ্কৃতীরা ধরা পরার পর কাজল শেখকে খুন করার কথা স্বীকারও করে। তখন থেকেই কাজল শেখের সঙ্গে দুজন দেহরক্ষী থাকত। আর এই দেহরক্ষী নিয়েই দলের অভ্যন্তরে কোন্দল বাড়ে।
অনুব্রত মণ্ডল ক্ষমতার শীর্ষে থাকার সময় তাঁর অনুগামীরা প্রশ্ন তোলেন, কেন নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে কাজলকে। এই প্রশ্ন তুলে নিরাপত্তা বাতিলের দাবিও জানানো হয়। অনুব্রত অনুগামীদের অভিযোগ ছিল, সেই সময় খুন-সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ছিল কাজল শেখ। তাই তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিতে হয় পুলিশ প্রশাসনকে। পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ফের নিরাপত্তা বাড়ানো হয় কাজল শেখের। জেলা সভাধিপতি হওয়ার পর একটি পাইলট কার, নীলবাতি গাড়ি ও দেহরক্ষী পান কাজল শেখ। এবার সেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ৷ সামনে, পিছনে পাইলট কার ওয়াই প্লাস নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাধারণত ১০ থেকে ১২ জন নিরাপত্তাকর্মী থাকেন। তাদের মধ্যে থাকে দুজন ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। বাকিদের মধ্যে ২ থেকে ৪ জন কমান্ডো। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে পুলিশ। কোনও স্পেশালাইজড বাহিনী থাকে না। বাড়িতেও পাহারা জোরদার করা হয়েছে। আর এই নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় খোদ কাজল শেখ। কিছুটা বিব্রতও তিনি।