সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বিশ্বের সবথেকে বড় পান্না উদ্ধার করে বিশ্বকে বিস্মিত করলেন দুর্গাপুরের যুবক। দক্ষিণ-মধ্য আফ্রিকার জাম্বিয়ার কাজেম খনি থেকে উদ্ধার হয় বিশ্বের এই অমূল্য রত্ন। ১.৫০৫ কেজির ও ৭৫২৫ ক্যারেটের এই পান্নার বর্তমান বাজারদর ১৫ কোটি টাকার বেশি। সম্প্রতি এই রত্নের খোঁজ জায়গা করে নিয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও। বাঙালি ভূতাত্ত্বিককে নিয়ে মাতামাতি চলছে সর্বত্র।
দুর্গাপুরের বিধাননগরের বাসিন্দা মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবা ডিএসপি বা দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন। ডিএসপির কাশীরাম দাস স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন মানস। তারপর দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ। এরপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ব নিয়ে বিএসসি ও এমএএমসি পাশ করার পরই শুরু হয় মানসের ‘স্বপ্ন উড়ান’। কিছুদিন মুম্বইতে চাকরি সূত্রে ছিলেন। এরপর সৌদি আরবের এক খনি সংস্থায় রত্ন পরামর্শদাতা পদে যোগ দেন দুর্গাপুরের মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই সোজা আফ্রিকার জাম্বিয়া।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় খেলতে এসে বিপত্তি, সুন্দরী তন্বীর প্রেমে মজে প্রতারণার শিকার দিল্লির ক্রিকেটার]
খনি বিশেষজ্ঞ হওয়ায় অমূল্য রতন খুঁজতে জাম্বিয়ার খনি বিশেষজ্ঞ রিচার্ড কাপেটা, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৬ সদস্যের দল কাজেমের রত্ন খনিতে শুরু করেন তল্লাশি। দু’জন জাম্বিয়ান নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন ওই দলে। বিশ্বের সবথেকে বড় পান্না (World’s Largest Emerald ) উদ্ধার করেন তাঁরা। বর্তমানে দুর্গাপুরের বিধাননগরে রয়েছেন মানস। নিজের বাসভবনে বসে মানস জানান, “কাজেম খনি থেকে প্রতিদিনই কিছু না কিছু রত্ন বেরোয়। কিছু কিছু জায়গা থেকে খুব ভাল মানের রত্ন বের হয়েছে। সেই নির্দিষ্ট জায়গাগুলিতেই শুরু হয় আমাদের অনুসন্ধান।” ২০২১ সালের ১৩ জুলাই আবিষ্কার হয় ‘চিপেমবল’। জাম্বিয়ার বাম্বা ভাষায় যার অর্থ ‘অর্থ ভাণ্ডার’। বিশ্বের সবথেকে বড় পান্না উদ্ধার করে তাক লাগিয়ে দেয় এই দল। সম্প্রতি তা গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গাও করে নিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে উদ্ধার হয়েছিল ১.১৩১ কিলোর পান্না।
৪ বছর সৌদির ওই সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন মানস। বর্তমানে স্ত্রীর সঙ্গে দুর্গাপুরেই রয়েছেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে তিনি যোগ দিয়েছেন অন্য একটি সংস্থায়। তবে তাঁর আবিষ্কার নিয়ে খুব একটা বিচলিত নন তিনি। আরও বড় অমূল্য রতনের খোঁজে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করেছেন মানস।