নন্দন দত্ত, সিউড়ি: শুধু একা নয়। ভালবাসার পোষ্যকে নিয়ে ইউক্রেন (Ukraine) থেকে সিউড়ি ফিরলেন শাহরুখ সুলতান আহমেদ। যুদ্ধক্ষেত্রে একা তাঁর শখের মিনিকে ফেলে আসতে চাননি চূড়ান্ত বর্ষের ডাক্তারি ছাত্র। শুধু একা বাঁচা নয়, পোষ্যকে বাঁচাতে মহার্ঘ্য বিমান ছেড়েছেন। দু’দিন প্রাণ হাতে নিয়ে অপেক্ষা করেছেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রাণ হাতে নিয়ে পোষ্যকে নিয়ে পাশের রাজ্যে ছুটে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। শেষে ইউক্রেনের মিনিকে নিয়ে সোমবার গভীর রাতে সিউড়ি ফিরেছেন শাহরুখ। ছেলের এমন মানবিকতায় গর্বিত বাবা।
বিমানযাত্রার ধকলের জেরে বিড়ালকে পাশে নিয়ে সিউড়ির সাজানোপল্লির বাড়িতে অকাতরে ঘুমাচ্ছেন শাহরুখ। পাশে তাঁর সাধের পোষ্য। একইভাবে মাড়গ্রামের শবনম খাতুন সোমবার দিল্লি এসে পৌঁছেছেন। ১০ দিন আগেই ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন নিয়ে ইউক্রেনে পাড়ি দিয়েছিলেন শবনম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই যুদ্ধের আতঙ্কে ফের দেশে ফেরা। কিন্তু যতক্ষণ তিনি বাড়ি না ফিরছেন, ততক্ষণ মনে শান্তি নেই শবনমের পরিবারের।
[আরও পড়ুন: ছেলের বিয়ের খুশিতে আত্মহারা, অতিরিক্ত মদ্যপানে বাবার মৃ্ত্যু]
ইউক্রেনের কিয়েভে ৫ বছর আগেই সিউড়ির সাজানোপল্লি থেকে পড়তে গিয়েছিলেন শাহরুখ। সামনের মে মাসে ছিল তাঁর বাকি তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষার যুদ্ধে নামার আগেই রাশিয়ার যুদ্ধে বেঁচে বাড়ি ফেরার শঙ্কা জুড়ে যায়। শাহরুখ জানান, “দেশে ফেরার জন্য হাতের কাছে যা পেয়েছি তাই নিয়ে ফিরেছি। ছাড়িনি শুধু পোষ্যকে। রোমানিয়া পর্যন্ত আসতে কোনও অসুবিধা হয়নি। আমার সঙ্গেই ছিল বিড়ালটি। খাওয়াদাওয়া করেছে। সে ব্যবস্থা ওরা করে দিয়েছিল। সুসেভ থেকে আমাদের দেশে ফেরার বিমান ধরার ব্যবস্থা করেছিল। আমাদের বুখারেস্ট যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। সুসেভ থেকে আমাদের ইন্ডিগোর বিমান দিয়েছিল। আমরা দেশে ফেরার বিমানে পোষ্যকে আনার জন্য কথা বলেছিলাম। ওরা বলেছিল কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু আগের রাতে পোষ্যকে নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে তাদের বিমানে উঠতে দেয়নি ইন্ডিগো বিমান কর্তৃপক্ষ।”
তবে যুদ্ধক্ষেত্রে পোষ্যকে ছেড়ে যেতে নারাজ শাহরুখ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিন্ধিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। বুখারেস্ট যেতে বলা হয়। সেখান থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে পোষ্যকে নেন। তিনি আরও বলেন, “মিলিসৌতি শিবিরে আমরা তখন আশ্রয় নিয়ে আছি। সেখানকার পুরসভার মেয়রের কাছে আমরা ১০ জন আবেদন করলাম। আমাদের ৯ জনের কাছে বিড়াল এবং ১ জনের কাছে কুকুর ছিল। তাদের নিয়েই আমরা দেশে ফিরতে পেরেছি এটাই আমাদের কাছে আনন্দের।”