সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ফিফার নির্বাচন বিধি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন, সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এদিন আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে (AIFF)। যার নোটিস দিতে হবে তিরিশ দিন আগে। এরপর নির্বাচিত কমিটি এসে নতুন করে ভারতীয় ফুটবলের সংবিধান তৈরি করবে। যার উপর ভিত্তি করে নতুন করে সংবিধান তৈরি হবে। আপাতত অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের জমা দেওয়া খসড়ার উপর ভরসা করেই ফেডারেশনের নির্বাচন হবে।
এই রায় ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই খুশি নন রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা। কারণ, রাজ্য সংস্থার পাশাপাশি ফিফা এবং এএফসি নির্বাচনের সংবিধান তৈরি নিয়ে অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের যে যে পয়েন্টে আপত্তি জানিয়েছিল, কোনওটাই গুরুত্ব দেয়নি আদালত। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের জমা দেওয়া খসড়াকে। যে রিপোর্টে ১২ জনের কমিটির মধ্যে ৫জন ফুটবলার রাখতেই হবে। যাঁর মধ্যে দু’জন মহিলা ফুটবলার।
এদিনের রায়ের পর অনেকে মনে করছেন, পুরো সংবিধান তৈরি করে ভারতীয় ফুটবলের নির্বাচন সম্পন্ন করতে অনেক সময় লেগে যাবে।
[আরও পড়ুন: মিটল ভিসা সমস্যা, নির্ধারিত দিনে আমেরিকাতেই ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০, খেলতে পারেন রোহিত]
এদিকে, ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। নাহলে ফিফার নির্বাসনের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি অক্টোবরে ভারতেই অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ। ফিফা যদি ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসনে পাঠায়, তাহলে এদেশে বিশ্বকাপের আয়োজন করা সমস্যার হয়ে যাবে। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দ্রুত নির্বাচন করিয়ে ফিফার নির্বাসন থেকে ভারতীয় ফুটবলকে সরিয়ে রাখতে চাওয়া হচ্ছে। পরে সময় নিয়ে দেখেশুনে নতুন কমিটি সংবিধান তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা দেবে।
অ্যাডমিনিস্ট্রটেরদের খসড়ার ভিত্তিতে এদিন সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দিয়েছে, তাতে সুব্রত দত্ত সহ অনেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ১২ বছর ধরে যারা ফেডারেশন এবং রাজ্য সংস্থায় রয়েছে, তাঁরা আর নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। পাশাপাশি আরও একটা কথাও এখন ভারতীয় ফুটবল মহলে ব্যাপক হারে ঘুরছে। ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা ভারতীয় ফুটবলের বিভিন্ন আর্থিক প্রসঙ্গ নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছেন। ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় (Bhaskar Ganguly ) ফেডারেশনের অনেক পদাধিকারীর বেতন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বহুবার। অথচ নিজেরা প্রতিমাসে ৫ লক্ষ টাকা ফি নিচ্ছেন ফেডারেশন থেকে। অনেকে বলছেন, ভারতীয় ফুটবলের সংস্কার করতে গিয়ে ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন ফুটবলাররা জানাতেই পারতেন, তাঁরা এই বিপুল পরিমাণ টাকা মাসে মাসে চান না। অথচ কলকাতা-দিল্লির বিমানের টিকিটের পাশাপাশি ফেডারেশনের খরচে বড় হোটেলে থাকছেন। তারপর মাসে ৫ লক্ষ টাকা ফি! যার অর্থ পাঁচ মাসের জন্য নিযুক্ত হলে এক একজন নিচ্ছেন ২৫ লক্ষ টাকা করে। এই সময়টা বাড়লে তা গিয়ে দাঁড়াবে জন প্রতি ৩০লক্ষ টাকা। অনেকে বলছেন, ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে অনেক প্রাক্তন ফুটবলারই ভারতীয় ফুটবলের সংস্কার করার জন্য এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। মানে, সংস্কারের নামে প্রতিবাদ জানিয়ে মাসে বড় টাকা পাওয়াটা অনেকের লক্ষ্য।
একদিকে বলা হচ্ছে, ফেডারেশনের বহু বাজে খরচ। অপরদিকে, সংবিধান তৈরি করতে গিয়ে মাসে ৫ লক্ষ টাকা নিচ্ছেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়রা! চুক্তি মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অনেকে বলছেন, একজন প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে, এই টাকাটা ফেডারেশনের জুনিয়র ডেভলপমেন্টেও দিতে পারতেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা তো এসেছেন সংস্কার করতে। তাছাড়া সারা দেশে কত জাতীয় ফুটবলার অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অথচ তাঁদের দাবির কথা বলতে গিয়ে ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়রা নিয়ে নিচ্ছেন ২৫ লক্ষ টাকা!