কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: স্রেফ একটা মিসড কল। ব্যস, তারপর ট্যাক্সি পেতে আপনাকে আর কোন কাঠখড় পোড়াতে হবে না। লাগেজ নিয়ে অযথা ছোটাছুটির বালাই নেই। ট্যাক্সি চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার হাত থেকেও রেহাই। এমনকি দালালচক্রের খপ্পর থেকেও নিষ্কৃতি। দমদম বিমানবন্দরে (Dumdum Airport) যাত্রীদের সুবিধার্থে এ রকমই একটি মসৃণ ট্যাক্সি বুকিং ব্যবস্থা চালু করল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
বিষয়টা কি? বিধাননগর কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ একটি ফোন নম্বর বিমান যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট করেছে। নম্বরটি হল ৭৪৩৯৭৫১৮৫৫। এই নম্বরে দমদমে নামা বিমানযাত্রীদের মিসড কল দিতে হবে একটি। তারপর সেই নম্বরে পুলিশের পক্ষ থেকে এসএমএস মারফত জানিয়ে দেওয়া হবে টাইম স্লট। এবং সঙ্গে একটি ওটিপি দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় প্রিপেইড ট্যাক্সি কাউন্টারে এসে ওটিপি নম্বরটি বললে গাড়ি পেয়ে যাবেন ওই যাত্রী। নিউ নর্মাল পর্যায় কলকাতার সঙ্গে আকাশ পথে দেশের বাকি শহরগুলির যোগাযোগ শুরু হয়েছে। বিমান আসা যাওয়া করছে লন্ডন, ঢাকা, দুবাই-সহ একাধিক দেশ থেকে। যাত্রীসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলকাতা থেকে বর্তমানে দৈনিক শতাধিক বিমান ওঠানামা করছে। যাত্রীসংখ্যা গড়ে ২৫-৩০ হাজার। কলকাতায় নামা যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছনোর জন্য প্রিপেইড ট্যাক্সি বুথ রয়েছে। এই বুথটিকেই আরও আধুনিকীকরণ করেছে ট্রাফিক পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘মেজাজ হারালে বাংলায় টেকা দায়!’, টেট ইস্যুতে ভাইরাল অডিও নিয়ে পার্থকে বিঁধলেন অনুপম]
বিধাননগরের ডিসি ট্রাফিক ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন, মিসড কল ব্যবস্থা চালুর ফলে ট্যাক্সির জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন এড়ানো যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে। এছাড়াও বিমানবন্দর চত্বরে অবৈধ গাড়ি ব্যবসার কারবারিদের প্রায়ই দেখা যায়। যাত্রীদের কাছ থেকে অত্যধিক ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে রয়েছে। এই মিসড কল ব্যবস্থা চালুর পর আর তাঁদের খপ্পরে পড়তে হবে না। প্রিপেইড বুথ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ ট্যাক্সি যাত্রীদের নিয়ে যায়। চালু করার দু’দিনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ যাত্রী মিসড কল ব্যবস্থার সুযোগ নিয়েছেন বলে দাবি ট্রাফিক বিভাগের। বিমানবন্দরের ভিতর ও বাইরের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল নম্বরটি ডিসপ্লে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিউ ইউ নামে একটি স্টার্টআপ সংস্থা এই মিসড কল ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। এই নয়া ব্যবস্থা যাত্রীদের জানান দিতে বিমানবন্দরের একাধিক জায়গায় ফ্লেক্স, হোর্ডিং ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে বিধাননগর কমিশনারেট। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রবীণদের এবং যাঁরা প্রথমবার বিমানে উঠছেন, এরকম যাত্রীদের কথা ভেবে বিষয়টিকে সরল করার চেষ্টা করা হয়েছে। অ্যাপ ডাউনলোড করতে বহু যাত্রী স্বচ্ছন্দ নন। অনেকের কাছে আবার স্মার্টফোন নেই। ফলে এইসব যাত্রীদের কথা বিবেচনার মধ্যে রেখে সেই পুরনো মিসড কল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।