সংবাদ প্রতিদি ডিজিটাল ডেস্ক: শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের পর এবার দীনেশ ত্রিবেদী (Dinesh Trivedi)। তৃণমূল (TMC)ছাড়লেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ। শুক্রবার রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে দীনেশ জানান, দলে থেকে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না, দমবন্ধ হয়ে আসছে। অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, নির্ভরযোগ্য এই সৈনিকও পা বাড়াচ্ছেন বিজেপির পথেই।
শুক্রবার রাজ্যসভায় বিতর্ক চলাকালীন তৃণমূলের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, ”আমার রাজ্যে হিংসা হচ্ছে। কিন্তু এখানে কিছুই বলতে পারছি না। আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে, কাজ করতে পারছি না।” এরপর তিনি আরও বলেন, ”আমাকে রাজ্যসভায় পাঠানোর জন্য দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কিন্তু রাজ্যে ঘটে চলা হিংসাত্মক কার্যকলাপ রুখতে কিছুই করতে পারছি না। আমার আত্মা বলছে, এখানে থেকে যদি কিছুই করতে না পারি, তাহলে এই পদ ছেড়ে দেওয়াই উচিত।” যদিও বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের দাবি, তিনি বাংলার মানুষের জন্য কাজ করতে চান। প্রসঙ্গত, একদিন আগেই নরেন্দ্র মোদির একটি ভিডিও পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। তারপরই জল্পনা উস্কে উঠেছিল।
দীনেশ ত্রিবেদীর তৃণমূল ত্যাগ নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনিও তৃণমূলের অন্য়ান্য নেতাদের মতো গেরুয়া শিবিরে পা বাড়াতে পারেন, এমনটাই জল্পনা চলছে। এ নিয়ে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Sing) বক্তব্য, ”ওঁকে বিজেপিতে স্বাগত।” তৃণমূলের তরফে সাংসদ সৌগত রায়ের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ”ভোটের মুখে এই সিদ্ধান্ত না নিলেই ভাল হত।”
[আরও পড়ুন: বেতন দিতে না পারায় ক্লাসে ঢুকতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ, আত্মঘাতী অবসাদগ্রস্ত ছাত্রী]
দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি নির্ভরযোগ্য সৈনিক দু’বার বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছেন। ছিলেন রেলমন্ত্রীও। খুব জনপ্রিয় না হলেও, সক্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত ছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। ২০১৯এর লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের কাছে পরাজিত হওয়ার পর দল তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদে মনোনীত করে। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি হিন্দি অ্যাকাডেমির ভারও দেওয়া হয়েছিল দীনেশ ত্রিবেদীকে। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে সেসব দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ।