শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কয়লা পাচারের সঙ্গে যোগই নেই। তিনি নির্দোষ। তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে সিবিআই। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত থেকে বেরিয়ে এমনই দাবি করলেন সিবিআই হেফাজতে থাকা বিকাশ মিশ্র (Bikash Mishra)। চারদিন সিবিআই হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার বিকাশকে আদালতে আনা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই ছিল চারদিন মাত্র হেফাজতে পাওয়া যাবে তাঁকে। কারণ হাই কোর্টের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্ত বিকাশ আছেন। তাই সেই রায় বহাল রেখে ফের জামিনে মুক্ত করে দেওয়া হল বিকাশকে।
কয়লা পাচারের ‘কিংপিন’ অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে বিকাশ মিশ্রকে। সূত্রের খবর, বিকাশকে জিজ্ঞাসা করে উঠে এসেছে বহু তথ্য। কিন্তু আদালতের বাইরে বেরিয়ে বিকাশের দাবি, লালার সঙ্গে মুখোমুখি জেরার কথা তাঁর জানা নেই। মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি এসব শুনেছেন। গত চারদিনে সিবিআই তাঁকে কী কী জিজ্ঞাসা করেছে? এই সমস্ত প্রশ্ন শুনে বিকাশের উত্তর, তিনি আইনি পরামর্শে রয়েছেন। তাই এসব প্রশ্নের উত্তর তিনি মিডিয়াকে দিতে পারবেন না। যদিও নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করেছেন বিকাশ। তাঁর দাবি, কয়লাকাণ্ডে তাঁর নামে ফলস কেস অর্থাৎ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। অনুপ মাজির সঙ্গে কোনও আর্থিক লেনদেন প্রমাণ করতে পারেনি সিবিআই। ৩৫ সপ্তাহ ধরে তিনি সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিচ্ছেন। সই করছেন আর চলে আসছেন। চার্জশিটে নাম জুড়ে দেওয়া হলেও কয়লাকাণ্ডের যোগের প্রমাণ নেই।
[আরও পড়ুন: জয় জগন্নাথ! মোহর ও দুর্নিবারকে সঙ্গে নিয়ে পুরী ভ্রমণে প্রসেনজিৎ]
এদিন শুধু বিকাশ মিশ্র নয়, ধৃত ইসিএল প্রাক্তন সিএমডি সুনীল কুমার ঝাঁ ও সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর আনন্দকুমার সিংকে সিবিআই আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সিবিআই কেস ডায়েরি জমা করার পর বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী শুরুতেই এদিন জানতে চান, কয়লা কাণ্ডে অভিযুক্তদের সঙ্গে একজনের যোগসূত্র বারবার পাওয়া যাচ্ছে-অনুপ মাজি ওরফে লালার, লালার স্ট্যাটাস কী? কয়লাকাণ্ডে সিবিআই আইও ওমেশ কুমার বিচারককে জানান, লালা এখনও সুপ্রিম কোর্টের সুরক্ষা কবচে আছেন। ১৮ জুলাই পর্যন্ত রয়েছে সুরক্ষা কবচ। বিচারকের প্রশ্ন ছিল, তাঁকে কি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়? না কি এমনিই মুক্ত রয়েছেন?
সিবিআইয়ের দাবি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ১৩ মে লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিচারকের প্রশ্ন, একা-একা জিজ্ঞাসাবাদ না কি অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে বসিয়ে বা মুখোমুখি? সিবিআইয়ের দাবি, অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে ২৩ মে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, লালার সঙ্গে বিকাশ মিশ্রকে মুখোমুখি জেরা করা হয়েছে। অন্যদিকে কয়লা কাণ্ডে ধৃত ইসিএল প্রাক্তন সিএমডি সুনীল কুমার ঝা ও সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর আনন্দ কুমার সিং-কে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল। পরবর্তী শুনানি ২৯ মে।