সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনভর সওয়াল-জবাব শেষে জামিন মিলল ডিএ (DA) আন্দোলনকারীদের। তাঁদের হয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালতে সওয়াল করেন সিপিএম নেতা তথা দুঁদে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya)। এরপর ৪৭ জনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধৃত আন্দোলনকারীদের নিঃশর্ত জামিনের দাবিতে সরব হয়েছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী যৌথ মঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা। জামিনের পর আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, কোনওভাবেই দাবি থেকে সরে আসবেন না। আগামী দিনে ফের শামিল হবেন আন্দোলনে।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে বুধবার রাজ্য সরকারি কর্মচারী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা পথে নামেন। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সরকারি কর্মীরা। তবে তাঁদের মিছিল আটকে দেওয়া হয়। পুলিশ ও সরকারি কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান সরকারি কর্মীরা। কার্যত দৌড়ে বিধানসভার সামনে পৌঁছন তাঁরা। সেখানে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। আরও একবার পুলিশ ও সরকারি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। কলকাতা পুলিশের ডিসি সাউথের (DC South) নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, টেনেহিঁচড়ে তাঁদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। আন্দোলনকারীদের পুলিশ ঘুষি মারে বলেও অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: দিল্লির জামা মসজিদে মহিলাদের একলা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, বিতর্ক বাড়তেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার]
পরে আইন অমান্যের অভিযোগে আন্দোলনকারীদের ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারা অর্থাৎ কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে কাজে বাধা, ৩২৩ ধারা অর্থাৎ পুলিশকর্মীকে মারধর, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ ধারা অর্থাৎ হিংসা ছড়ানো, ৫০৯ ধারা অর্থাৎ মহিলা পুলিশকর্মীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও কটূক্তি এবং ৫০৬ ধারা – হুমকি, এই সমস্ত জামিন অযোগ্য ধারায় DA আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে সোনা পাচার! গ্রেপ্তার বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের ছেলে, আত্মীয়]
বৃহস্পতিবার তাঁদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি সওয়ালে বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা অভাবনীয়। পুলিশ ছেড়ে দেবে বলেছিল, কিন্তু তারপরেও ছাড়েনি। আন্দোলনকারীরা কি বোমা ছুড়েছে, নাকি অন্য কিছু করেছে? কলকাতায় ১৪৪ ধারা হামেশাই ভাঙে। কী দোষ এদের? হেফাজতে রাখার কী যুক্তি? ডিএ দেবে না, আন্দোলনও করতে দেবে না?’’ এ বিষয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, হাই কোর্ট কোনও কাজ করছে না। কারণ ডিএ আদায়ের দাবিতে শামিল আন্দোলনকারীদের অনেকেই আদালতের কর্মী। সন্ধের দিকে ৪৭ জনকে জামিন দেয় আদালত।