শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ‘ধুম মাচাতে’ নয়, এবার হাতির উপর নজরদারি ও তাদের গতিবিধির খবর দ্রুত পৌঁছে দিতে জঙ্গলের পথে ছুটবে বাইক বাহিনী। গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের অন্তর্গত গরুমারা, চাপরামারির জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকা, এমনকী, জঙ্গল সংলগ্ন বহু গ্রাম ও জনবসতি রয়েছে যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল। কিন্তু হাতি ঢুকেছে বুঝতে পারলে সেখানে প্রাণ ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি আটকাতে দ্রুত খবর পৌঁছে দেওয়া জরুরি। সেক্ষেত্রে এই বাইক বাহিনী খুবই কার্যকরী হবে বলে মনে করছে বনদপ্তর। আপাতত গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের অন্তর্গত এলাকায় নজরদারির জন্য নামানো হচ্ছে ছ’টি মোটর বাইক। একটি বাইকে দুজন করে বনকর্মী নজরদারি চালাবেন। আগামীতে সংখ্যাটা বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনে বৈকন্ঠপুর বন বিভাগের মহারাজ ঘাট এলাকায় হাতির হামলায় ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর হাতিই এখন সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে বনদপ্তরের। পরীক্ষা চলাকালীন যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য জঙ্গলে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ও পালন করতে হচ্ছে বনকর্মীদের। গরুমারা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ও আলাদা করে যাতাযাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে গরুমারা বন্যপ্রানী বিভাগের বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতিম সেন জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: সপ্তাহে দু’দিন ছুটি, বদলে প্রতিদিন কাজের সময় বাড়ছে ব্যাংক কর্মীদের]
বনদপ্তরের রিপোর্ট বলছে, দলবদ্ধ হাতির তুলনায় দলছুট হাতিরাই বেশির ভাগ সময় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। বৈকুন্ঠপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় দলছুট একটি দাঁতাল হাতিকেই দায়ী করা হচ্ছে। হাতির গতিবিধি জানতে তাই নজরদারিতেই বেশি জোর দিচ্ছে বনদপ্তর। একই সঙ্গে হাতির গতিবিধি পরিবর্তন হলে সেই খবর ও যাতে দ্রুত পাওয়া যায় এবং দ্রুত পদক্ষেপ করা যায় তার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাইক বাহিনী অনেকটাই কাজে আসবে বলে মনে করছেন বনকর্তারা।
কারণ, জঙ্গলের বহু জায়গা রয়েছে যেখানে বড় গাড়ি নিয়ে যাওয়া কষ্টকর। সেক্ষেত্রে বাইকে করে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যেতে পারে। নজরদারির পাশাপাশি দ্রুত খবর আদান প্রদানের ক্ষেত্রেও বাইক বাহিনী কাজে আসবে। হাতি গ্রামে ঢুকতে পারে বুঝতে পারলে দ্রুত গ্রামে গিয়ে সেই খবর পৌঁছে দিতে পারবে বাইক বাহিনী। একাজে বাইক চালাতে পারে একই সঙ্গে কাজেও দক্ষ এমন কর্মীদের কাজে লাগাতে চলেছে বনদপ্তর। আপাতত গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের অন্তর্গত এলাকায় ছ’টি বাইককে কাজে নামানো হবে বলে বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতিম সেন জানিয়েছেন।