অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: জিটিএ (GTA) নির্বাচন ঘোষণা হতেই অনশনে বসলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। আজ অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকেই অনশনে বসেছেন তিনি। বরাবর নির্বাচনের বিপক্ষে ছিলেন গুরুং (Bimal Gurung)। এবিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লিখেছিলেন। কিন্তু তারপরেও জিটিএ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিমল অনশনের বসার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও অন্যান্য দল এটাকে আমল দিতে নারাজ।
পাহাড়ে ফিরে এসে বিমল গুরুং জোট বাঁধে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই। পাহাড়ের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার কথাও জানান স্বয়ং গুরুং। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, “পাহাড়ের স্বার্থে রাজ্য সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে মেনে নেব”। কারণ, কেন্দ্র শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জিটিএ নির্বাচন করানোর কথা বলতেই বেঁকে বসেন বিমল। সম্প্রতি এই নির্বাচন স্থগিত করার অনুরোধ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চিঠিও পাঠান তিনি। যদিও তাতে কর্ণপাত না করেই নির্বাচন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এতেই বেজায় চটে যান গুরুং। কারণ, চিঠি পাঠানোর সময়ই বলেছিলেন তার দাবি মানা না হলে তিনি অনশনে বসবেন।
[আরও পড়ুন:গভীররাতে বর্ধমানে ভোজ্য তেলের কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা]
সেই কারণেই বুধবার থেকেই অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গুরুং। যখন সকলে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত তখন বিমলের এহেন পদক্ষেপ নানান প্রশ্নও তুলে দিল। পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিমল পুরনির্বাচনেও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল। সে হঠাৎ সরাসরি রাজ্যের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় হতবাক পাহাড়বাসীও। দুই দলের সম্পর্কের ফাটলও স্পষ্ট হয়ে গেল। এদিন নির্বাচন ঘোষণা হতেই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হতে রাত হয়ে যায়। পরে সাংবাদিকদের বিমল গুরুং বলেন, “আমাদের দাবী পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। জিটিএ এর মধ্যে ৩৯৬টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারপর নির্বাচন করা যেতে পারে। কিন্তু এখন এটা আমরা মেনে নেব না। তাই পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি মেনেই আমি বুধবার থেকে অনশনে বসব।”
এদিকে বিমলের এই সিদ্ধান্তকে আমল দিতে নারাজ বাকি রাজনৈতিক দলগুলো। এদিন জন আন্দোলন পার্টির সভাপতি হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, “ওটা বিমলের দলের সিদ্ধান্ত। তাই নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা নির্বাচনের জন্য তৈরি।” একইভাবে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অমর লামা বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচন হোক। আর দায়িত্ববান রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা অংশ নিচ্ছি। কে বা কারা অনশন করছে তা নিয়ে ভাবছি না।”